মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় একটি গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, দেশটির সামরিক বাহিনী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে সরকারের দাবি, ‘সন্ত্রাসীরা’ আগুন লাগিয়ে সামরিক বাহিনীকে দোষারোপ করছে। ভয়াবহ ওই আগুনে পুড়ে দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
কিন মা নামে ওই গ্রামের বাসিন্দারা বিবিসি’কে জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনীর দেয়া আগুনে সেখানকার ২৪০টি ঘরের মধ্যে ২০০টিই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
তারা জানিয়েছেন, জান্তা সরকারের বিরোধিতা করা স্থানীয় একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষের পর গ্রামটিতে আগুন দেয়া হয়।
মিয়ানমারে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকের এক পোস্টে বলেন, খবর এসেছে জান্তা ম্যাগওয়েতে একটি গ্রাম পুরোপুরি পুড়িয়ে দিয়েছে, প্রবীণদের হত্যা করেছে। তারা আবারও দেখিয়েছে যে, সামরিক বাহিনী গুরুতর অপরাধ অব্যাহত রেখেছে এবং মিয়ানমারের জনগণের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধা নেই।
অবশ্য মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে অগ্নিকাণ্ডের জন্য ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর দুর্নাম করতে পরিকল্পিতভাবে গ্রামটিতে আগুন দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমারের এমআরটিভি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বিবিসিকে জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। মিয়ানমারের নতুন জান্তা সরকারের বিরোধী ওই সংগঠনটি দেশীয় তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই শুরু করেছে।
তিনি বলেন, পিডিএফ সদস্যরা পিছু হটলে তারা (নিরাপত্তা বাহিনী) গ্রামে আসে এবং আগুন দেয়া শুরু করে। এতে প্রায় পুরো গ্রামটাই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আরেক বাসিন্দা বলেন, গ্রামের সবখানে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। বন্দুকের গুলি থেকে বাঁচতে আমাদের পালিয়ে যেতে হয়েছিল, তাই দূর থেকেই সেসব দেখতে বাধ্য হই।
রয়টার্সের খবর অনুসারে, মঙ্গলবারের ওই অগ্নিকাণ্ড এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তার চিত্র নাসার স্যাটেলাইটেও ধরা পড়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই জান্তা সরকারের বিরোধিতায় রাস্তায় বিক্ষোভ করছে দেশটির জনগণ। জান্তাবিরোধী ওই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত পাঁচ হাজার জনকে।
নদী বন্দর / জিকে