বদলগাছী উপজেলায় ছোট যমুনা নদীর বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কদমগাছী এলাকায় প্রায় ১ হাজার মিটার জুড়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৫০০ ফুট জমি ও পাঁচ-ছয়টি বাঁশঝাড় ভেঙে নদীগর্ভে চলে যায়।
কদমগাছী গ্রামের আকবর হোসেন, আবুল কালাম ও শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালের বন্যায় বেড়িবাঁধটি ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। গত বর্ষায় বেড়িবাঁধের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী বস্তা-বালু দিয়ে কোনো রকমে রক্ষা করেছিল।
মথরাপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাদী চৌধুরী টিপু বলেন, ‘আমি বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। একাধিক বার পানি উন্নয়ন বোর্ডে অবগত করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে পড়ায় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ভাঙন রক্ষা করা হয়েছিল। জরুরিভাবে সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।’ আধাইপুর ইউপির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘২০১৮ সালে বর্ষা মৌসুমে দেশের উত্তরাঞ্চল ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়ে পড়লে বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদী ও তুলশীগঙ্গা নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ছোট যমুনা নদীর কদমগাছী স্থানে বাঁধের প্রায় ১ হাজার ফিট ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে এখন। বাঁধের ভাঙনগুলোতে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখন পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’
ইদ্রাকপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বাছের আলীসহ ঐ গ্রামের মোকলেছার রহমান, ফারুক হোসেন, বেলালসহ অনেকে বলেন, ‘আমরা গত বন্যায় নিজ উদ্যোগে বাঁধটি কোনো রকমে রক্ষা করি, বর্তমানে নদীতে পানি বেশি হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’ বিলাশবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান কেটু বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে নদীর বাঁধ সংস্কার করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনেক বার জানানো হলেও কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।’ বালুভরা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আয়েন উদ্দীন বলেন, ‘ইদ্রাকপুর নামক স্থানে গত বন্যায় ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল, এলাকাবাসী বাঁধ রক্ষা করে। এখন সেই ভাঙনগুলো রোধের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলপনা ইয়ামিন বলেন, ‘কদমগাছীর বেড়িবাঁধ ভাঙন বিষয়ে সমন্বয় মিটিংয়ে চেয়ারম্যানরা আলোচনা করেছে। আমি বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি।’
নওগাঁ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান মোবাইল ফোনে বলেন, ‘কদমগাছীর বাঁধটি জরুরিভাবে মেরামত করা প্রয়োজন। আমি সেখানে লোক পাঠিয়েছি, দেখে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নদী বন্দর / সিএফ