বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার মারা গেছেন। বুধবার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বর্ষীয়ান এই অভিনেতার মৃত্যুতে ভারতের চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমেছে।
চল্লিশের দশকে সিনেমায় আসা ইউসুফ খান ওরফে দিলীপ কুমার মাত্র ৬৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন৷ তবে সাফল্য কিংবা অর্জনের তালিকা তার অনেক লম্বা।
আমৃত্যু কোটি মানুষের ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন। তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভারতবর্ষের মানুষের কাছে আইকন৷
‘গঙ্গা যমুনা’ সিনেমায় গ্রামের যুবকের চরিত্রে যেমন তিনি অনবদ্য ছিলেন তেমনি ‘মুঘল ই আযম’ সিনেমায় সেলিম চরিত্রে কিংবদন্তি হয়ে আছেন।
তার অভিনীত ‘দেবদাস’ চরিত্রটিও সর্বজনের কাছে ভালোবাসা পেয়েছে৷ এছাড়াও পেয়েছেন অনেক আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ পদক পেয়েছিলেন দিলীপ কুমার। ২০১৬ সালে পেয়েছেন ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খেতাব পদ্মবিভূষণ। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং মুম্বাইতে তার বাসায় গিয়ে পদক হাতে তুলে দেন।
এর আগে ১৯৯৫ সালে পেয়েছেন দাদাসাহেব ফালকে পুরষ্কার।
১৯৯৭ সালে পাকিস্তান তাদের সর্বোচ্চ খেতাব নিশা-ই-ইমতিয়াজ তুলে দেয় দিলীপ কুমারের হাতে। দিলীপ কুমার নিয়মানুযায়ী ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর কাছ থেকে ওই পদক গ্রহণের জন্য অনুমতি নিয়েছিলেন।
চল্লিশের দশকে দেবানন্দ, রাজ কাপুর ও দিলীপ কুমারকে বলা হতো বলিউডের ত্রিমূর্তি। তবে এ তিনজনের মধ্যে দিলীপ কুমারই অভিনয়গুণে, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে ছিলেন৷ সেই স্বীকৃতি রাজ কাপুর নিজেই দিয়ে গেছেন।
বিবিসি বাংলা ঘটনাটির বর্ণনা দিয়েছে, ‘তার (দিলীপ কুমার) সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বী ও শৈশবের বন্ধু রাজ কাপুর ছবিটি দেখে ব্যাঙ্গালোর থেকে ফোন দিয়েছিলেন দিলীপ কুমারকে এবং বলেছিলেন, ‘বন্ধু আজ রায় এসেছে। তুমিই সেরা শিল্পী।’
বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চনও ছিলেন দিলীপ কুমারের অনুরাগী৷ তিনি একবার বলেছিলেন, তিনি দিলীপ কুমারের ‘গঙ্গা যমুনা’ সিনেমাটি অনেকবার দেখেছেন শুধু এটি দেখতে যে উত্তর প্রদেশের সাথে যার কোন যোগসূত্র ছিলো না সেই পাঠান সন্তান কিভাবে সেখানকার সঠিক স্থানীয় উচ্চারণে কথা বলেছেন।
বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানও ছিলেন দিলীপ কুমারের অন্ধ ভক্ত৷ দিলীপের সঙ্গে পিতা পুত্রের সম্পর্কও ছিলো তার।
তবে একটি আক্ষেপ রয়েই গেছে৷ এত এত প্রশংসা-স্বীকৃতি পাওয়া দিলীপ কুমারের হাতে একটিও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিতে পারেনি হতভাগা বলিউড। হয়তো এই সৌভাগ্যটা অর্জন না করার আফসোস রাষ্ট্র হিসেবে ভারতও করবে সবসময়।
নদী বন্দর / বিএফ