ঈদ উপলক্ষ্যে সবার ঘরেই নানা ধরনের মুখরোচক খাবারের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও আত্মীয় ও বন্ধুদের বাসাতেও ঈদে দাওয়াত থাকে। সব মিলিয়ে ঈদ ও এর পরবর্তী দিনগুলোতে সবাই কমবেশি সুস্বাদু ও মজাদার খাবার খাওয়ার মধ্যেই থাকেন।
আর সুস্বাদ খাবার সামনে পেলে জিহ্বা নিয়ন্ত্রণে রাখা সবার জন্যই কষ্টকর। তাই অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেইসঙ্গে বেড়ে যেতে পারে ওজন। তাই ঈদে সুস্থ থাকতে খেয়াল রাখবেন- আপনি কী খাচ্ছেন, কতটুকু খাচ্ছেন, সেসব খাবারের প্রতিক্রিয়াই বা কী ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি।
সকালের খাবারে যা খাবেন
সকালের খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। অনেকেই ঈদের সকালে মিষ্টিমুখ করে নামাজ পড়তে যান। এক্ষেত্রে সেমাই, পায়েশ ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। তবে খালি পেটে মিষ্টি এসব খাবার খেলে সারাদিন অ্যাসিডিটিতে ভুগতে পারেন।
তাই ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে দুইটি সেদ্ধ ডিম খেয়ে যেতে পারেন। পাশাপাশি চেষ্টা করুন মৌসুমি ফলের জুস খেতে। একটি মাঝারি আকৃতির আমও খেতে পারেন। খাওয়ার আধা ঘণ্টা পর দেড় থেকে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নামাজ পড়তে যান।
পরিমাণ মতো খাবেন
যেকোনো খাবারই যদি আপনি পরিমাণমতো খান; তাহলে সব ধরনের খাবারও খেতে পারবেন আর শরীরও থাকবে সুস্থ। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া এড়াতে ও সুস্থ থাকার প্রথম শর্ত হলো পরিমাণ মেপে খাবার খাওয়া।
কোরবানি ঈদে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে মাং খাওয়া হয়ে থাকে, তাই অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে অনেকেরই। এর কারণ হলো একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে হজম করতে পারেন না অনেকেই।
ফলে পেট ফাঁপে, জ্বালাপোড়া করে, ব্যথা করে, বারবার পায়খানা হতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। যদিও কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেতে মানা নেই, তবে পরিমাণ বজায় রাখা খুবই জরুরি।
এ ক্ষেত্রে শুরু থেকেই পরিকল্পনা থাকা উচিত। যেহেতু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই সবাই মাংস খাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তাই সকাল আর দুপুরের খাওয়াটা কম খেলেই ভালো। অন্য বাসায়ও যথাসম্ভব কম খাওয়া উচিত।
ঈদের দিন তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি, মুরগি, খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা ইত্যাদি খাওয়া হয়। তবে এসব খাদ্য সকাল আর দুপুরে কম খাওয়াই উত্তম। কারণ বিকেলে প্রচুর পরিমাণে মাংস খাওয়ার সম্ভাবনা থাকবেই।
চর্বি এড়িয়ে চলুন
অতিরিক্ত চর্বি খাওয়া এমনিতেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কোরবানির সময় এ বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, আমরা রান্না সুস্বাদু হবে মনে করে মাংসে বেশ কিছু চর্বি আলাদাভাবে যোগ করি, এমন ধারণা একেবারেই ভুল।
মাংসের সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে সবজি খাওয়া যেতে পারে। টাটকা সবজি পাকস্থলীকে সাবলীল রাখে। পরিমিতি বোধ যেখানে রসনা সংবরণ করতে পারে, সেখানে ভয়ের কিছু নেই। মাংসে তেল বা ঘিয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
অন্যদিকে ভুনা মাংসের বদলে শুকনো কাবাব করে খান, কোমল পানীয় ও মিষ্টি একেবারেই কম খান। কোরবানির ঈদের সময়ও ভালো থাকা যায়। সেই সঙ্গে হালকা ব্যায়াম বা বেশ কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি কমিয়ে নিতে পারলে আরও ভালো। এসব বিষয় মাথায় রাখলে ঈদেও সুস্থ থাকতে পারবেন।
নদী বন্দর / জিকে