সুনামগঞ্জের দিরাই শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কালনী নদী। এ নদীর ওপর ছয় বছর আগে নির্মিত হয় ‘কালনী সেতু’। তবে সেতু হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে রাজধানী ঢাকায় যেতে এ অঞ্চলের মানুষকে ঘুরতে হয় প্রায় তিন ঘণ্টার পথ। কাজে আসছে না প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি।
স্থানীয়রা জানান, পূর্ব দিরাইয়ে বসবাস দেড় লাখ মানুষের। এই সংযোগ সড়কটি হলে উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন সহজ হতো তাদের। চলাচল করতে পারতো দিরাই-শাল্লার প্রায় চার লাখ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের পূর্বাঞ্চল, শাল্লা উপজেলা, জগন্নাথপুরের কলকলিয়া ইউনিয়নের ভাটি অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সড়ক কালনী-জগদল-কলকলিয়া। এই সড়কটি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে ওই অঞ্চলের মানুষকে বছরের বেশিরভাগ সময় চলতে হয় ট্রলারে।
শুধু তাই নয়, ২০১৩ সালে কালনী সেতুর কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১৫ সালে। সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রয়াত সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘পূর্ব দিরাইয়ের জগদল-হোসেনপুর-কলকলিয়া সড়কের কাজ শেষ হলে এই সেতু দিয়েই আঞ্চলিক মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে দিরাই-শাল্লা।’ কিন্তু গত আট বছরেও দিরাই-শাল্লাবাসীর সেই স্বপ্নের সড়কের প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শেষ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মহিবুর রহমান বলেন, কালনী নদীর ওপর ছয় বছর আগে প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ হয়। কিন্তু সেই সেতু দিয়ে চলাচল করার জন্য সড়ক নির্মাণ হয়নি। আমি এটাকে দায়িত্বের অবহেলা মনে করি। আমরা দিরাইবাসী জোর দাবি জানাই, দ্রুত সেতুর সংযোগ সড়ক যেন নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কুতুব আলী বলেন, সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু সেই সেতুর সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে আমাদের দুর্ভোগ লেগেই আছে। আমি মনে করি সরকারের ওই ২২ কোটি টাকা জলে গেছে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মুজাফর আলী বলেন, কী আজব ব্যাপার! ২২ কোটি টাকার সেতু আছে অথচ সড়ক নেই! সড়ক হলে পূর্ব দিরাইয়ের দেড় লাখ মানুষের উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হবে।
দিরাই-শাল্লার সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা বলেন, দিরাই-হুসেনপুর-জগদল-কলকলিয়া সড়কের জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে আমি কয়েকবার মৌখিকভাবে বলেছি। তারা বললেন, ডিও লেটার দিয়ে পাঠান। আমি সেটিও করেছি। এই সড়কটির জমি অধিগ্রহণের কাজ জানুয়ারিতেই শেষ হয়েছে। এখন প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করে একনেকে পাঠানো হবে। প্রধান প্রকৌশলী বলেছেন, দ্রুতই সেই কাজটি করা হবে।
সুনামগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, এই সড়কের ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদনের অপেক্ষায়। প্রকল্প অনুমোদন হলেই সড়কের পরবর্তী কাজ শুরু হবে।
নদী বন্দর / জিকে