করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর অনেকেই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন। এর কারণ কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো গুরুতর সংক্রমণের পর চুল ঝরা অস্বাভাবিক বিষয় নয়।
ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই চালাতে গিয়ে শরীরে নানা ধরনের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটেছে। এ কারণেই করোনা থেকে সেরে ওঠার পর কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত চুল ঝরার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভারতের ব্যাঙ্গালোরের অ্যাস্টার আরভি হসপিটালের কনসালটেন্ট ডার্মেটোলজিস্ট ডা. স্নেহা সুদ এ বিষয়ে জানিয়েছেন, কয়েক মাসের মধ্যেই চুল পড়ার সমস্যা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে এবং চুল আগের মতোই বাড়বে।
করোনার কারণে শরীরে যে চাপ পড়েছে; তা চুল ঝরার একটি কারণ। পাশাপাশি চুল পড়ার সমস্যাটি মানসিক চাপের কারণেও ঘটছে।
বিশেষজ্ঞের মতে, দিনে ১০০-২০০টি চুল ঝরতে পারে। যা স্বাভাবিক হিসেবেই ধরা হয়। আর এটিই রোগীর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সাময়িক চুল ঝরার এ সমস্যা ৩-৬ মাসের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। সেইসঙ্গে যে পরিমাণ চুল ঝরে; নতুন করে সেগুলোও ফিরে আসে।
তবে ঠিক কোন কারণে চুল ঝরছে; তা এ সময় চিহ্নিত করা খুবই জরুরি। ডায়েট, যোগাসন, এক্সারসাইজ, মেডিটেশন, পর্যাপ্ত ঘুমের সাহায্য সামান্য চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কলম্বিয়া এশিয়া হসপিটালের তরফে কনসালটেন্ট ডার্মাটোলজিস্ট ডা. দীপা কৃষ্ণমূর্তি এ বিষয়ে জানান, দিনে ১০০টি পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক। গ্রোথ ফেস থেকে রেস্টিং ও তার পর শেডিং ফেস পর্যন্ত চুলের একটি সাইকেল চলে।
ভাইরাল বা অন্য কোনো জ্বরের কারণে শরীরে যে প্রদাহ হয় ও চাপ বাড়ে; তা চুলকে শেডিং ফেসে প্রবেশ করতে বাধ্য করে। একে টেলোজেন ইফলুভিয়াম বলা হয়।
যদিও চুল নিজের থেকে গজিয়ে ওঠে। তবে যাদের চুল একেবারেই পাতলা হয়ে গেছে; তাদের জন্য চিকিৎসকরা হেয়ার সাপ্লিমেন্ট এবং পেপ্টাইড বেসড সিরাম ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
এতে তাড়াতাড়ি চুল গজিয়ে উঠতে পারে। আবার অপুষ্টিজনিত কোনো কারণ থাকলে; সেগুলোরও যথাযথ চিকিৎসা করাতে হবে বলে মত চিকিৎসকদের।
করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর চুল পড়া ঠেকাতে যে বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখা জরুরি-
>> চুলে আপাতত তেল ব্যবহার বন্ধ করুন।
>> খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রাখুন।
>> আমন্ড, আখরোট, সেদ্ধ চিনাবাদাম, চিয়া বীজ, সবুজ শাক-সবজির মতো অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি খাদ্য তালিকাভুক্ত করতে হবে। এটি সংক্রমণ থেকে শরীরকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবে।
>> পর্যাপ্ত পানি পান করুন। হাইড্রেটেড থাকুন।
>> অস্বাভাবিক হারে চুল পরলে এবং টাকমাথা দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
>> মাইল্ড সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
>> হেয়ার কালার, হেয়ার স্ট্রেটনার বা কার্লারসহ তাপ ও রাসায়নিকযুক্ত চুলের চিকিৎসা এড়িয়ে চলুন।
>> খুশকির সমস্যা থাকলে দ্রুত তা সারিয়ে তুলুন।
সূত্র: হেলথলাইন/ইন্ডিয়া ডট কম
নদী বন্দর / পিকে