চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে আগামী এক মাসের মধ্যে সমন্বিত ডিজাইন প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পানিসস্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
বুধবার (১১ আগস্ট) সচিবালয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন নিয়ে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা চট্টগ্রামের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মহোদয়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। উনি এসেছেন, সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। উনি সিদ্ধান্তও দিয়েছেন যে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় যে ডিজাইন করেছে সেই ডিজাইন, সিডিএ যে ডিজাইন করেছে সেই ডিজাইন নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো নিয়ে সবার সঙ্গে একত্রে বসে আমরা কম্প্রিহেনসিভ একটা প্ল্যান করব যাতে সেটা চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
আমাদের ডিজাইন সেকশনকে এক মাস সময় দেয়া হবে, তারা এর মধ্যে ডিজাইনটা করে আমাদের দেখাবে, বলেন জাহিদ ফারুক।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতা থেকে দূর করা প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। চট্টগ্রামে অনেক অবৈধ স্থাপনা খালের উপরে হয়েছে। সবকিছু নিয়ে বিরাট সমস্যা আছে। এই সমস্যা দূর করতে আমাদের সময় লাগবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামে একটি প্রকল্প (চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন) বাস্তবায়ন করছে। সেই প্রকল্প চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন এবং জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়তার যে উদ্দেশ্যে…নকশার ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা দেখা না দেয় সেজন্য আজ বসেছি।
খণ্ড খণ্ড ডিজাইন সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পূর্ণাঙ্গ ডিজাইন শেষ করে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব বসে এটাকে দেখবেন। যে উদ্দেশ্যে এটা করা হচ্ছে তা পূরণ করছে কিনা। পরবর্তী সময়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খালগুলো হস্তান্তরের পর গত পাঁচ মাসে সিটি করপোরেশন ভালো কাজ করেছে জানিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, যার জন্য এত ভারি বর্ষণ হওয়ার পরও কোথাও জলাবদ্ধতা ওইরকম হয়নি। বাইরে কিছু হয়েছে, সেটা নিয়ে তো আমরা কাজ করিনি। খালগুলোর সংস্কারের জন্য কতগুলো প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও সারা বাংলাদেশের অন্যান্যগুলোকেও আমলে নেয়া হবে।
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে এর আগেও প্রকল্প নেয়া হয়েছে কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। নতুন প্রকল্প কতদিনের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে- এ বিষয়ে একজন সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তাজুল ইসলাম বলেন, এই প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে বেশ আগে। এখন ডিজাইনটা কমপ্লিট করতে হবে…ডিজাইনটি যখন করা হয়েছিল, সেই ডিজাইনটা পুনরায় যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। স্টেক হোল্ডার বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর তাদের কিছু পর্যবেক্ষণ আছে, সিডিএরও কিছু পর্যবেক্ষণ থাকতে পারে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাওয়ার পর তারা এই কথাগুলো উত্থাপন করার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রজক্টটা রিভিউ করার কথা হয়েছে। সেই রিভিউয়ের অংশ হিসেবে আজকে বসেছি। শুধু এই প্রকল্প দিয়ে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না। আরও প্রকল্প আছে, আরও প্রকল্প নিতে হতে পারে।
সভায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নদী বন্দর / সিএফ