দারুণ ফর্মটা বজায় রেখেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আরও একবার দল রাজস্থান রয়্যালসকে ভরসা দিলেন। সঙ্গে যোগ হলো অবিশ্বাস্য ফিল্ডিং। তবু জয় পায়নি তার দল। দুবাইয়ে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রাজস্থানকে।
১৫০ রান তাড়া করতে নেমে টপ অর্ডারই ম্যাচ বের করে দিয়েছে ব্যাঙ্গালুরুকে। দুই ওপেনার বিরাট কোহলি ২০ বলে ২৫ আর দেবদূত পাডিক্কেল ১৭ বলে করেন ২২ রান।
তিন নম্বরে নামা শ্রীকর ভারত ৩৫ বলে ৪৪ রানের এক ইনিংস খেলেছেন। ৩০ বলে হার না মানা ৫০ করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
মোস্তাফিজ প্রথম ওভারে মার খেলেও পরে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তার হাতে বল তুলে দেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। ওই ওভারে কাটার মাস্টার খরচ করেন ১২ রান। ষষ্ঠ ওভারে এসে ৬ রান দিয়ে পাডিক্কেলকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ফিজ।
এরপর কার্তিক তিয়াগির করা ইনিংসের অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে নিশ্চিত একটি ছক্কা বাঁচিয়ে দেন ফিল্ডিংয়ে। ম্যাক্সওয়েলের হিট থেকে ফাইন লেগে কয়েক গজ লাফিয়ে এক হাতে বল মাঠের ভেতর ফেলেন মোস্তাফিজ। তার এমন ফিল্ডিংয়ের পর প্রতিপক্ষরাও তালি বাজিয়েছেন। প্রশংসা ঝরেছে ধারাভাষ্যকারদের কণ্ঠে।
১৬তম ওভারে ফের মোস্তাফিজকে আক্রমণে আনেন রাজস্থান অধিনায়ক। এবার সেট ব্যাটসম্যান ভরতকে বদলি ফিল্ডার রনজু রাওয়াতের ক্যাচ বানান টাইগার পেসার। ওই ওভারে দেন মাত্র ৪।
দল হেরে যাওয়ায় শেষ ওভারটি আর করতে পারেননি মোস্তাফিজ। ৩ ওভারে ২০ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েই শেষ করেন।
এর আগে ওপেনিংয়ে এভিন লুইসের ঝড়ের পরও রাজস্থান রয়্যালসের পুঁজিটা বড় হয়নি। হঠাৎ ধসে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রানে থামে মোস্তাফিজদের দল।
অথচ দুবাইয়ে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনাই পেয়েছিল রাজস্থান। জশস্বী জ্যাসওয়েল আর এভিন লুইস ৪৯ বলে গড়েন ৫৭ রানের ঝড়ো জুটি। নবম ওভারে এসে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। ২২ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৩১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন জ্যাসওয়েল।
তবে এভিন লুইসের ঝড় চলেছে আরও কিছুটা সময়। ৩১ বলেই হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রাজস্থানের ক্যারিবীয় এই ব্যাটসম্যান। ১১ ওভারেই ১ উইকেটে ১০০ রান ছুঁয়ে ফেলে রাজস্থান। সেখান থেকে শেষ ৯ ওভারে মাত্র ৪৯ রান যোগ করতে পেরেছে দলটি, হারিয়েছে ৮ উইকেট।
১৩তম ওভারে অভিষিক্ত গার্টনকে তুলে মারতে গিয়ে টপএজ হয়েছেন লুইস, ৩৭ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ফিরেছেন ৫৭ রানে। তার ওই ফেরাই যেন রাজস্থানের শনি লাগিয়েছে। সুবিধা করতে পারেননি মহীপাল লমরর। ইয়ুজবেন্দ্র চাহালকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েছেন এই ব্যাটার (৩)। পরের ওভারে শাহবাজ আহমেদ ঘূর্ণিতে জোড়া শিকার করে বিপদে ফেলে দেন রাজস্থানকে। অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ১৫ বলে ১৯ করে আউট হওয়ার পর ২ রানে সাজঘর ধরেন রাহুল তেয়াতিয়া।
৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে রাজস্থান। এরপর লিয়াম লিভিংস্টোনও (৬) ফিরে গেলে ১২৭ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে সঞ্জু স্যামসনের দল।
সেখান থেকে আর পুঁজিটা বড় করতে পারেনি তারা। ক্রিস মরিস ১১ বলে ১৪ করে শেষ ওভারে আউট হলে শেষ আশাটাও ফুরোয় রাজস্থানের।
রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল হর্ষল প্যাটেল। ৩৪ রান খরচায় ৪টি উইকেট শিকার করেন এই পেসার।
নদী বন্দর / বিএফ