ভারতের কন্নড় ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা পুনিত রাজকুমার। তার বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর। গত ২৯ অক্টোবর হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে পুনিতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। তার মৃত্য শোক নামিয়েছে ভারতীয় সিনেমার আঙিনায়।
প্রিয় তারকার মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে প্রাণ যায় আরও তিন জনের। তার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয় হৃদরোগে। এক জন আত্মহত্যা করেন। এখান থেকে বোঝা যায় তার জনপ্রিয়তা।
তবে মৃত্যুর পর যেন তিনি আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। ক্রমেই বাড়ছে সেই জনপ্রিয়তা। মৃত্যুর পর পুনিতের বেশ কিছু সামাজিক উদ্যোগ ও মহৎ কাজের কথা জানা যায়। যা তাকে মহাতারকায় পরিণত করেছে। অভাবীর অভাব দূর করা, এতিমদের জন্য স্কুল, ১,৮০০ জন অনাথ মেয়েকে দত্তক নেয়াসহ নানা রকম আয়োজন। যা দেখে পুনিতের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়।
১২ দিন কেটে গিয়েছে পুনিত রাজকুমার নেই। তার সঙ্গে আরও হাজার হাজার জীবন জড়িয়েছিল। মৃত্যুর পরেও সেই মানুষগুলো ছেড়ে যাননি দক্ষিণী সুপারস্টারকে। প্রতি দিন ৩০ হাজার মানুষ জড়ো হচ্ছেন পুনিতের জন্য।
ব্যবসায়ী শিবকুমার তার বড় ছেলের নাম রেখেছেন পুনিতের নামে। দুই ছেলেকে নিয়ে কান্তিরাভা স্টুডিওতে পুনিতের সমাধিতে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছেন তিনি। ছোট ছেলেকে কাঁধে নিয়ে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করলেন শিবকুমার। তার কথায়, ‘কেবল তার অভিনয়ের জন্য নয়, সমাজের প্রতি তার কর্তব্যবোধের জন্যও আমরা মুগ্ধ। তার মতো সুপারস্টার আমরা পাবো না আর।’
পুনীতের আরও এক ভক্ত ধর্মেশ তার স্ত্রী এবং ছ’মাসের সন্তানকে নিয়ে কান্তিরাভা স্টুডিওতে পুনিতকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
কর্নাটকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনুরাগীরা এবং পুনিতের ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা দলে দলে ভিড় করছেন সমাধিতে। ৮৭ বছরের নানজাম্মা কাঁদতে কাঁদতে পুনিতকে দেখতে এসেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পুনিত রাজকুমারের বাবার সমস্ত ছবি দেখেছি ছোটবেলায়। পুনিতের সব ছবি না দেখলেও তার সঙ্গে একাত্ম বোধ করি আমি।’
তিন শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পুনিতের সমাধিতে ভিড় সামলানোর জন্য। সকাল ৯টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর আউটার রিং রোডের এই সমাধিস্থলে ভক্তদের সমাগমের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
কন্নড় এবং তেলুগু চলচ্চিত্র জগতের সুপারস্টার পুনিত রাজকুমার। কেবল এই একটি পরিচয়ে পরিচিত নন তিনি। আমৃত্যু তিনে দুঃস্থদের কল্যাণে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন। ঠিক যেভাবে চলচ্চিত্র জগতে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, একইভাবে এমন অনেকে তার অনুপস্থিতিতে অসহায়। তারা পুনীতের মুখাপেক্ষী ছিলেন।
নদী বন্দর / সিএফ