ঐতিহ্যবাহী খাবার কলাইয়ের রুটি তৈরি হয় মাসকলাই থেকে। তাছাড়াও মাসকলাইয়ের বীজ ডাল হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাসকলাই চাষ হয় অনেক আগে থেকেই। তবে এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র । আম বাগানে মাসকলাইয়ের বাম্পার ফলনের আশা করছেন এ জেলার চাষিরা। কৃষকরা বলছেন বাগানে আম গাছের ফাঁকে ফাঁকে মাসকলাই চাষ করছেন তারা সাথী ফসল হিসেবে।
রোববার (১৪ নভেম্বর) জেলার ইলমালপুর, বালিয়াডাঙ্গা, শিবগঞ্জ, কালোপুর, শ্যামপুর, গোমস্তাপুর, ধাইনগর, ইসরাইল মোড়, আব্বাস বাজার, চককীর্তী, চৌডাল, পোনরশিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শিবগঞ্জের ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকার জয় নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, মাসকলাইয় চাষে খরচ কম হওয়ায় গত বছর ৫ বিঘা জামিতে মাসকলাই চাষ করেছিলাম সেই জমিতে ছোট ছোট আম গাছও ছিল। এতে আমার খরচ হয়েছিল প্রায় ৬ হাজার টাকা। আর এ জমি থেকে মাসকলাই হয়েছিল প্রায় ১৭ মণ। যা বিক্রি করেছিলাম প্রায় ৪৫ হাজার টাকায়। এবার ও পাঁচ বিঘা জমিতে মাসকলাই চাষ করেছি আশা করছি এবার ফলন আরও বেশি হবে।
জেলার ইসলামপুর এলাকার কলাই চাষি আনারুল জানান, আমি প্রায় ১৫ বছর থেকেই মাসকলাই চাষ করি। এবারও ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছি তবে গতবছরের তুলনায় এবার ফুল ফল ভালো হয়েছে। আশা করছি গত বছরের থেকে এবার বেশি ফলন হবে।
গত বছর এ সময়ে ১৫ কাঠা মাসকলাই চাষ করে ১৮ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। এ ফসল আমরা বাড়তি ফসল হিসেবেই চাষ করি কারণ আম গাছ অনেক বড় হয়ে গেছে তাই এ জমিতে অন্য ফলস হয় না।
শ্যামপুর ইউনিয়নের চামাভান্ডার গ্রামের মাসকলাই চাষি মজিবুর জানান, আম গাছ তো বড় হয়ে গেছে বাপু তাই কোনো ফসল হয় না। এই গাছগুলোতে প্রতিবছর প্রায় ৮-১০ মণ আম হয়। কিন্তু প্রতিবছর এই জমিতে কলাই চাষ করা করণ হচ্ছে এই ফসলে কোনো খরচ লাগে না বাড়তি ফসল হিসেবেই পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, জেলার প্রায় সব উপজেলায় আম বাগানে মাসকলাই চাষ হলেও বেশি হয় শিবগঞ্জ উপজেলায়।
এবার জেলায় ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। আর গত বছর চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। কৃষকদের আমরা সার ও বীজ দিয়ে সহায়তা করছি। মাসকলাই মাড়াইয়ের পর কৃষকের নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারলে সামনের বছর মাসকলাই চাষ আরও বাড়বে।
নদী বন্দর / সিএফ