শীতকালে দেশে প্রায়ই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা দেয়। এসময় ধানের বীজতলার বাড়তি যত্ন নিতে হয়। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে ধানের বীজতলার যত্নে করণীয় বিষয়ে কৃষকদের জরুরি কিছু বিষয়ে জানতে হবে।
তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের চারা প্রথমে ক্রমশ হলুদাভ হয়ে মারা যায়। এছাড়াও শীতের প্রকোপে পাতা পোড়া ঝলসানো রোগের কারণে মারা যেতে পারে। রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চলে শীতের স্থায়িত্ব ও তীব্রতা দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় অনেক বেশি। সবসময় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে বীজতলা রক্ষায় বাড়তি কিছু যত্ন নিতে হয়।
জেনে নিন তীব্র শৈত্যপ্রবাহে ধানের বীজতলা রক্ষায় যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে-
শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে দিতে হবে। বীজতলায় ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজতলায় পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে জমাকৃত শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে।
চারা পোড়া রোগ দমনের জন্য রোগের প্রাথমিক অবস্থায় প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলিমিটার অজোঅক্সিটোবিন বা পাইরোক্লাস্টবিন জাতীয় ছত্রাকনাশক মিশিয়ে বীজতলায় দুপুরের পর স্প্রে করতে হবে।
বীজতলায় চারা হলুদ হয়ে গেলে প্রতি শতক জমিতে ২৮০ গ্রাম হারে ইউরিয়া সার দিতে হবে। ইউরিয়া দেওয়ার পর চারা সবুজ না হলে প্রতি শতক জমিতে ৪০০ গ্রাম হারে জিপসাম দিতে হবে। রোপণের জন্য কমপক্ষে ৩৫ থেকে ৪০ দিনের চারা ব্যবহার করা ভালো। এবয়সে চারা রোপণে চারার মৃত্যুহার কমে চারা সতেজ থাকে এবং ফলন বেশি হয়।
চারা রোপণের সময় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে কয়েকদিন দেরি করে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে চারা রোপণ করতে হবে। এরপর শৈত্যপ্রবাহ হলে জমিতে ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে। শীতের তীব্রতা ও চারার বয়স বিবেচনায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা অনুশীলন করলে সুস্থ ও রোগমুক্ত চারা উৎপাদনের মাধ্যমে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব।
নদী বন্দর / জিকে