বান্দার জন্য মহান আল্লাহর সবচেয়ে বড় অনুগ্রহ হালাল রিজিক। তিনিই বান্দাকে বিভিন্ন উপায়ে রিজিক দিয়ে থাকেন। হালাল রিজিক লাভে কুরআন-সুন্নায় ৬ টি উপায় ওঠে এসেছে। যারা এ ছয়টি কাজ যথাযথভাবে মেনে চলে, আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য হালাল রিজিকের দরজা খুলে দেন।
হালাল রিজিক লাভ ও তাতে বরকত লাভে কুরআন-সুন্নায় সুস্পষ্ট ঘোষণা এসেছে। তাহলো-
– তাক্বওয়া বা আল্লাহকে ভয় করা
আল্লাহকে যে যতবেশি ভয় করবে আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির তত সহায় হবেন। এবং কল্পনাতীতভাবে দান করবেন রিজিক। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। আর তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন।’ (সুরা তালাক : আয়াত ২-৩)
– তাওয়াক্বুল বা আল্লাহর উপর ভরসা করা
আল্লাহর প্রতি একান্তভাবে ভরসা করলে শুধু রিজিকই নয় বরং মহান আল্লাহ ওই বান্দার সবকিছুর ব্যাপারে যথেষ্ট হয়ে যান। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।’ (সুরা তালাক : আয়াত ৩)
– করজে হাসানা বা সাদকা করা
যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর পথে খরচ করবে, দান-সাদকা করবে কিংবা অন্যকে উত্তম ঋণ দান করবে, তখন আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার রিজিক অনেকগুণ বাড়িয়ে দেবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
এমন কে আছে যে, আল্লাহকে করজ দেবে, উত্তম করজ; অতপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহু গুণ বৃদ্ধি করে দেবেন। আল্লাহই সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা সবাই ফিরে যাবে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৪৫)
– শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা
সুখে-দুঃখে সব সময় আল্লাহর শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা আদায় করলে বান্দার প্রাপ্তি ও চাহিদাকে আল্লাহ পূরণ করে দেবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড়ই কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৭)
– ইসতেগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা
আল্লাহ ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমাকারীকে ভালোবাসেন। আর ক্ষমা প্রার্থনায় যেসব নেয়ামত লাভ হয়, এরমধ্যে রিজিকের প্রাধান্যই বেশি। আল্লাহ তাআলা হজরত নুহ আলাইহিস সালামকে দেয়া নসিহতে তাই বলেছেন-
‘অতপর (আমি নুহকে) বলেছি, তোমরা তোমাদের পালন কর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র (রিজিক উৎপাদনে) বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)
– আত্মীয় সম্পর্ক ঠিক রাখা
আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখা মহান আল্লাহর অন্যতম ইবাদত। এ ইবাদতে শুধু রিজিক বাড়ে এমন নয়, বরং হায়াতও বাড়ে বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্বনবি। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে কামনা করে যে তার রিজিক বেড়ে যাক এবং হায়াত (জীবন) দীর্ঘায়িত হোক; সে যেন আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে।’ (বুখারি)
মুমিন মুসলমানের উচিত, কুরআন-সুন্নায় ঘোষিত উল্লেখিত নসিহতগুলো মোতাবেক জীবন পরিচালনা করা। হালাল ও উত্তম রিজিক লাভে আল্লাহর কাছে তার সেখানো পদ্ধতিতে চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা সবাইকে উত্তম রিজিক লাভের তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর নসিহত মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
নদী বন্দর / এমকে