কৃষি ও খাদ্য নিয়ে সপ্তম ডি-৮ (উন্নয়নশীল আটটি দেশ নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা) মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠক ১২ ও ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানটি হবে ভার্চুয়ালি।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) ‘সপ্তম ডি-৮ মিনিস্ট্রিয়াল মিটিং অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি’ নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আগামী ১২ ও ১৩ জানুয়ারি ঢাকায় ‘কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তার ওপর সপ্তম ডি-৮ মন্ত্রিপর্যায়ের মিটিং’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কোভিডের কারণে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে এ মিটিং। বাংলাদেশ এখন ডি-৮ ফোরামের সভাপতি। বাংলাদেশ বর্তমানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামেরও (সিভিএফ) সভাপতি। এ মিটিংয়ে ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচারের প্রমোশন নিয়ে আলোচনা হবে, সেজন্য এ মিটিংটি গুরুত্বপূর্ণ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এ উচ্চপর্যায়ের মিটিংয়ে জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক। এসব দেশের কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী এবং সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। এছাড়া আইডিবি, এফএও, আইএফএডি, আইআরআরআই, সিআইএমএমওয়াইটিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন।’
‘এবারের মিটিংয়ের মূল আলোচনার বিষয় হলো কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষির উন্নয়ন। এক্ষেত্রে জোটভুক্ত দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচিত হবে। কৃষির উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে করণীয়, যৌথ কৃষি গবেষণা, যান্ত্রিকীকরণ, এগ্রোপ্রসেসিং, ব্লু ইকোনমি, সার উৎপাদন, বীজ, অ্যানিমেল ফিড, ভ্যালু চেইন উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোকপাত করা হবে।’
বর্তমান বিশ্বে খাদ্য জোগান ও সরবরাহ এক কঠিন সমস্যার সম্মুখীন জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ হিসেবে বলা যায় উৎপাদন হ্রাস, কৃষিজমির পরিমাণ হ্রাস, চাষের প্রতি মানুষের অনীহা, পেশা পরিবর্তন, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের অভাব, আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের বিপর্যস্ত অবস্থা এবং চলমান কোভিড। তাই বর্তমান সময়ের বিবেচনায় খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা টেকসই রাখা খুবই চ্যালেঞ্জিং বলে আমি মনে করি। সেজন্য এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশের জোট বা ডি-৮ একসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’
সকল আশঙ্কা পেছনে ফেলে করোনা মহামারির চরম বিরূপ পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক পদক্ষেপে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড বোরো উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ টন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গত বছরের তুলনায় এ বছর সকল ফসলের উৎপাদনই বেড়েছে।’
মোটা চালের উৎপাদন ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন, গম ১২ লাখ টন, ভুট্টা প্রায় ৫৭ লাখ টন, আলু ১ কোটি ৬ লাখ টন, শাকসবজি ১ কোটি ৯৭ লাখ টন, তেল ফসল ১২ লাখ টন ও ডালের উৎপাদন ৯ লাখ টন হয়েছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এক বছরেই কৃষি মন্ত্রণালয় ৭ লাখ টন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ বছর ৩৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।’
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।
নদী বন্দর / জিকে