1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
হারিয়ে যাচ্ছে কৃষকের বন্ধু বক - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৫২ বার পঠিত

হারিয়ে যাচ্ছে কৃষক ও কৃষির বন্ধু পাখিরা। দ্রুত শহরায়নের ফলে পরিবেশবান্ধব এসব পাখি আজ বিলুপ্তপ্রায়। কৃষিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও কারেন্ট জালের ব্যবহারের ফলে মারা পড়ছে এসব কৃষিবান্ধব পাখি। জলবায়ু পরিবর্তন ও পাখিদের আবাসস্থল বড় গাছ ও বন-জঙ্গল ধ্বংসের ফলেও হারিয়ে যাচ্ছে পাখি।

এক সময় বিল ও জলাশয়ের ধারে দল বেঁধে নামতো দেশি সাদা বক। কৃষকের লাঙ্গল দিয়ে জমি কর্ষণ ও ফসল কাটার সময় পাখির দল ঘিরে ধরতো। পাখির দল ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে পেট ভরতো। জীববৈচিত্রের আদরমাখা এই দেশি পাখি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।

এমন বৈরি পরিবেশের মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের মাঠে ইরি ধানের ক্ষেতে কৃষক চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করার সময় দেখা গেলো শত শত সাদা বক। এ সময় দেখা যায়, প্রায় শতাধিক বক উড়ে এসে কৃষকের লাঙ্গলের ফলার চার পাশে ঘিরে কিচির মিচির শব্দে উড়ে পোকা খাচ্ছে। কখনো ঝাঁক ধরে উড়ে যাচ্ছে আকাশে। কখনও আবার এ জমি থেকে অন্য জমিতে উড়ে গিয়ে বসছে। অপুর্ব এদের এই কোলাহল দেখে মুগ্ধ পথচারিরা।

এই মাঠে কাজ করা কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, এই সাদা বক আমাদের অনেক উপকার করে। চারা ধানের জমিতে মাজরা পোকা ও ফড়িংসহ ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে থাকে। এছাড়া ক্ষেতে পানি দেওয়ার পর যেসব পোকা ভাসতে থাকে তা খেয়ে পরিষ্কার করে। এতে ফসলের উপকার হয়। কিন্তু এখন এই সাদা বক আগের মতো আর দেখা যায় না। শিকারীদের ফাঁদে পড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে এই সাদা বক।

জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর গ্রামের কৃষক গোলাম রসুল জানান, ছোট বেলা থেকে মাঠেই কাটে সকাল-সন্ধ্যা। ছোট বেলায় মাঠে অনেক ধরনের পাখি দেখতাম। প্রতিদিন ঘুম ভাঙতো পাখির ডাকে। কিন্তু বর্তমানে সেসব পাখি আর দেখা যায় না। গাছ কাটায় পাখিরা আবাসস্থল হারাচ্ছে। তাছাড়া জমির ফসলে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ছোট মাছ ও পোকামাকড় মারা যাচ্চে। ফলে বিষযুক্ত খাদ্য খেয়ে প্রাণ হারাচ্ছে এসব পাখি।

 

এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বংশ বৃদ্ধিতো দূরের কথা টিকে থাকাই পাখিদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে প্রতিকূলতার মাঝেও সামান্য কিছু পাখি টিকে আছে। সেগুলোও কতদিন থাকবে বলা মুশকিল। একদল অসাধু মানুষ পাখি ধরে হাটে-বাজারে বিক্রি করছে কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ঝিনাইদহ শহরের হাসানুজ্জামান জানান, ১৫ থেকে ২০ বছর আগেও বাড়ির পাশের ঝোঁপ ঝাড়ে বসবাস করা অসংখ্য পাখির কিচিরমিচির ডাকে সন্ধ্যা হতো। আবার পাখির ডাকে ঘুম ভাঙতো। দ্রুত নগরায়নের ফলে পাখির আবাসস্থল হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এখন আর আগের মতো পাখি দেখা যায় না।

ঝিনাইদহ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি মাসুদ আহম্মেদ সনজু জানান, গ্রামের ঐতিহ্য অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক এই সাদাবক আগের মতো আর দেখা যায় না। এই পাখিটি পরিবেশ দূষণ ও শিকারীদের ফাঁদে পড়ে এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এই পাখিসহ সকল প্রকার পাখি টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার ব্যানার্জী বলেন, বক আমাদের প্রাকৃতিক বন্ধু। বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে কীটনাশক ব্যবহার কমাতে হবে। যাতে বিষাক্ত মাছ ও পোকামাকড় খেয়ে বক না মারা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই পাখি মারার কোনো নিয়ম নেই। কেউ যদি মেরে থাকে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই।

নদী বন্দর / পিকে

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com