1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
কফি ও ড্রাগন চাষে চমকে দিয়েছেন খাদিজা - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১৫৫ বার পঠিত

ইচ্ছা আর অদম্য চেষ্টা থাকলে কোনো কাজই যে অসম্ভব নয়, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নীলফামারীর জলঢাকার নারী উদ্যোক্তা খাদিজা বেগম। তিনি কফি ও ড্রাগন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে পেয়েছেন ব্যাপক সফলতা।

পরিচিত ফসল চাষের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে নতুন নতুন ফলের চাষ করে এলাকায় আলোড়ন তুলেছেন তিনি। পথ দেখাচ্ছেন বেকার যুবক-যুবতীদের। খাদিজা বেগম উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের সুনগর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

২০১৪ সালে খাদিজা বেগমের স্বামী মারা যান। স্বামীকে হারিয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে জীবনযাপন শুরু হয়। এখন বড় ছেলে চাকরি ও ছোট ছেলে উচ্চশিক্ষার জন্য এলাকার বাইরে থাকেন। ছেলেরা শখ করে দুয়েকটি ড্রাগন ফল ও কফির চারা বাড়িতে নিয়ে আসেন।

সেই থেকে খাদিজা স্বপ্ন দেখেন কফি ও ড্রাগন চাষের। আর এখান থেকে ২০১৮ সালের জুন মাসে ১৬ শতক জমির উপরে তিনি শুরু করেন ড্রাগন ও কফি চাষ। বর্তমানে খাদিজা বেগমের একাকীত্বের সময় কাটে বাগানে কাজ করে। অনেক যত্ন ও নিবিড় পরিচর্যা করে তিনি বাগান গড়ে তুলছেন।

বর্তমানে তার বাগানে ২৬০টি ড্রাগন ও ২০৮০টি কফি গাছ আছে। ১৬ শতক জমির উপর বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন ড্রাগন ফল ও ২৪ শতকে রয়েছে কফির খামার। করোনার মধ্যে তিনি কয়েকবার ড্রাগন ফল বিক্রির পাশাপাশি দেশের কৃষকদের মাঝে এই ফলের চাষ ছড়িয়ে দিতে চান।

খাদিজা বেগমের ড্রাগন খামার দূর থেকে দেখলে মনে হয় ক্যাকটাস লাগিয়েছেন। একটু কাছে যেতেই চোখজুড়িয়ে যাবে এ বাগান দেখে। প্রতিটি গাছে রয়েছে ফুল, ফল, মুকুল, পাকা ড্রাগন ও কফি।

 

এ বিষয়ে খাদিজা বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ২৯ মে আমার স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর আমি একাকীত্বের জীবনযাপন করছিলাম। আমার দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। বর্তমানে বড় ছেলে চাকরি করে ও ছোট ছেলে উচ্চশিক্ষার জন্য এলাকার বাইরে থাকে। ছেলেরা শখ করে দুয়েকটি ড্রাগন ফল ও কফির চারা নিয়ে আসতো। এখান থেকেই শুরু ড্রাগন ও কফি চাষ।

তিনি আরো জানান, আগে এই জমি খালি পরে থাকতো। পরে যখন এই জমিকে বাগানের রূপ দিতে থাকি তখন থেকে শুরু হয় বাগান করার উদ্যোগ। কফি গাছে এবারই প্রথম কফি ধরেছে। অ্যারাবিকা ও রোবাস্টা জাতের দুই ধরনের কফি গাছ ও এবারই প্রথম কফি গাছে ফল এসেছে। বর্তমানে খাদিজা বেগমের একাকীত্বের সময় এ বাগানে কাজ করেই কাটে।

অনেক যত্ন ও নিবিড় পরিচর্যা করে এ বাগান গড়ে তুলছেন তিনি। খাদিজা বেগম ভিয়েতনামের জাতীয় ড্রাগন ফল চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেতে শুরু করেছেন। টক-মিষ্টি স্বাদের ড্রাগন চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৈমারী ইউনিয়নের এই নারী উদ্যোক্তা।

তিনি জানান, ২০১৮ সালের জুন মাসে ১৬ শতক জমির উপরে ড্রাগন ফলের বাগানের সূচনা করেন মাত্র ২৬০টি চারা দিয়ে। ইতিমধ্যে গাছের বয়স প্রায় ৩ বছর হয়ে গেছে। ড্রাগন গাছে ফুল আসার ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। এক একটি ফলের ওজন ২৫০-৫০০ গ্রাম হয়ে থাকে। এছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ থেকে ১০০ থেকে ১৫০টি ফল পাওয়া যায়। সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে একটি গাছ থেকে ৩০-৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ফল পাওয়া সম্ভব।

 

এখন তিনি প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ২০ কেজি ফল বিক্রি করছেন। যার বাজার মূল্য প্রতি কেজি ৪০০ টাকা। খামার থেকে বিক্রি হচ্ছে ড্রাগন গাছের চারা। প্রতিটি ড্রাগনের চারা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মীর তামিম বান্না বলেন, খাদিজা বেগমের বাগানটি আমরা নিয়মিত পরিদর্শন করছি ও বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি ২০১৮ সালে স্বল্প পরিসরে ড্রাগন ও কফি চাষ প্রাথমিকভাবে শুরু করেন এবং বাগান শুরু করার পর তার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়। পরে তিনি বাণিজ্যিকভাবে বাগানের কার্যক্রম শুরু করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হন।

নিজেদের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে বাগানকে আরো সম্প্রসারিত করেন। বর্তমান সরকারের নির্দেশনা এক টুকরো জমিও ফাঁকা না রাখা। তাই আমরা বসতবাড়ির আশেপাশে সবাই যদি স্বল্প পরিসরে এই উদ্যোগ গ্রহণ করি তাহলে দেশে পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আমাদের দেশের কৃষি বাণিজ্যিকভাবে সফল হবে বলে আমি আশা করছি।

নদী বন্দর / সিএফ

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com