বিষখালী নদীর কোলঘেঁষা বরগুনার বেতাগী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রামের রাস্তা গত পূর্ণিমার জোয়ারে ভেঙে যায়। উত্তর বেতাগীর এ রাস্তার ভাঙা অংশে পূর্ণিমার জোয়ারের অতিরিক্ত পানি প্রবেশ করায় কৃষকদের উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে মরিচ, বাদাম, মুগডাল ও বোরো ধানের বীজতলা। উঠতি ফসল ঘরে তুলতে না পারায় চরম হতাশা ও দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।
সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপচারিতায় জানা গেছে, গত এক বছর আগে বেতাগী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিষখালী নদীর পাড় ঘেঁষা গ্রামীণ জনপদের রাস্তা তৈরি হয়েছিল। গত পূর্ণিমায় জোয়ারে বিষখালী নদীর পানির চাপে তা ভেঙে যায়। অতিরিক্ত পানিতে তলিয়ে যায় পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আংশিক এলাকা এবং বেতাগী সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঝোপখালী গ্রামের আংশিক এলাকা। এছাড়া পানির নিচে তলিয়ে গেছে বোরো ধানের বীজতলা, মুগডাল, বাদাম , ঢেঁড়স, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, করলা, শসা ও মরিচ।
মাঠ ভরা ফসলে কৃষকের স্বপ্নও ছিল অনেক। সময় অনুযায়ী আর ১০-১৫ দিনের মধ্যে এসব ফসল ঘরে তোলা যেতো। ফসল বিক্রির টাকায় ধার-দেনা পরিশোধ হতো। কিন্তু কৃষকের সেই সোনালী স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিসসূত্রে জানা গেছে, রাস্তা ভেঙে জোয়ারের পানির নিচে রয়েছে ৭৫ হেক্টর ইরি ধানের বীজতলা, ৫৫ হেক্টর চিনাবাদাম, ৭০ হেক্টর মরিচ, ৩৫ হেক্টর মুগডাল ও ৭৪ হেক্টর জমির পুঁইশাক, ডাঁটাশাকসহ বিভিন্ন প্রজাতির শাক-সবজি।
বেতাগী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক বেল্লাল হোসেন জানান, বোরো ধানের বীজ বপনের পরই পানিতে ডুবে যায় এবং ১০-১২ দিন পানিতে বীজতলা তলিয়ে থাকায় বীজতলা পচন ধরছে।
উত্তর বেতাগী গ্রামের আব্দুল খালেক হাওলাদার বলেন, মুগডাল, মরিচ ও বাদাম ক্ষেতে রয়ে গেছে। সব নষ্ট হয়ে গেছে। এতো ক্ষতি কী দিয়ে পূরণ করবো! একই কথা বললেন উত্তর বেতাগী গ্রামের কৃষক মো. নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, ধারদেনা করে মূখডাল, বাদাম ও করলা চাষ করা হয়েছে। কিন্তু ফসল তোলার কয়েকদিন পূর্বে পানিতে নষ্ট হয়ে গেলো।
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, কৃষকদের কাছে উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পানি অপসারিত না হওয়ায় ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে জেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে তথ্য প্রেরণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, রাস্তা ভেঙে বিষখালীর পানিতে ফসলের মাঠ তলিয়ে গছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে শিগগিরই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
নদী বন্দর/এসএফ