বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার ঘাটতি আছে বলে মত দিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব উল্লেখ করে তারা বলেছেন, প্রযুক্তি পণ্যে কর বৃদ্ধিতে ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্তরায়। এছাড়া সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে তারা মত দিয়েছেন।
রোববার (১২ জুন) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ পরবর্তী এক আলোচনা সভায় তারা এ মত দেন।
আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর নির্বাহী পরিচালক
ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক ও মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের অর্থনীতি কঠিন সময় পার করছে। ডলারের রেট বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। এবার যে কর কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে তা ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব। তবে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে আরও বরাদ্দ বাড়ানোর সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, বাজেটে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ আছে। একটা হচ্ছে রাজস্ব কম আহরণ, যেটা প্রতিবছরই হয়, সামনের দিনেও হবে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মপরিল্পনা আমরা দেখি নাই। মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা নেই। রাজস্ব বোর্ডের কোনো সংষ্কারের কথাও বলা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বাজেটের ঘাটতি দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু বর্তমানে এখানে দুটি জিনিস করা হয়েছে। বৈদেশিক উৎস থেকে আনবে সেটা ভালো কথা। কিন্তু এই টাকার পরিমাণ ১১ বিলিয়ন ডলার। দু বছর আগে তা ছিল ছয় বিলিয়ন ডলার। ঘাটতির এই বিষয়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আর অভ্যন্তরীণ সোর্স থেকে যে অর্থ সংগ্রহ করার কথা বলা হয়েছে সে জায়গায় ব্যাংকিং খাত প্রস্তুত কি না? ব্যাংকিং খাতে বর্তমানে যে তারল্য সংকট। তাহলে কী করে সরকার ব্যাংক থেকে নেবে?
মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্য সরকার ঠিক করেছে তা ঠিক আছে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, কিন্তু তা বাস্তবায়নের জন্য সঠিক পন্থা অবলম্বন করা হয়নি। বাজেট বক্তৃতায় এমন কিছু বলা হয়নি। মুদ্রানীতি নিয়েও বলা হয়নি।
সভায় অংশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সব সমাজেই বৈষম্য আছে। তবে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ দিয়ে বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করছে। দেশ উপরের দিকে উঠছে। এটা স্বীকার করতে হবে। এটা নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ নাই।
এছাড়া আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বেসিসের সাবেক সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বক্তব্য দেন।
নদী বন্দর/এসএফ