1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
সঙ্কট-শঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে করণীয় ও দোয়া - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৯ অপরাহ্ন
নদী বন্দর ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২১
  • ১৯৬ বার পঠিত

সুসময়-দুঃসময়, সঙ্কট-সম্ভাবনা ও তা থেকে মুক্তি সবই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। এ কারণে কোনো ঈমানদার বান্দা কখনো সঙ্কট-শঙ্কাপূর্ণ অবস্থা কিংবা সম্ভাবনার ক্ষেত্রেও হতাশ হয় না। আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়। কুরআন-সুন্নায় বার বার এ আশ্রয় প্রার্থনার বিষয়টি ওঠে এসেছে।

কেননা পরিস্থিতি যত খারাপ কিংবা ভালোই হোক না কেন, তা পরিবর্তনশীল। আল্লাহ তাআলা সব সময় অবস্থার পরিবর্তন করেন। আর তা অনেক সময় বান্দার চাওয়ার ওপরও নির্ভর করে। মহান আল্লাহর ঘোষণা-
وَتِلْكَ الْأَيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ
‘মানুষের মধ্যে আমি পালাক্রমে এই দিনগুলোর আবর্তন-পরিবর্তন ঘটাই।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪০)

মহান আল্লাহ সুখ-দুঃখ, জয়-পরাজয় পালাক্রমে একেক সময় একেক জাতিকে দান করে থাকেন। তবে পরিস্থিতি যাই হোক মুমিন মুসলমান সব সময় সঙ্কট-শঙ্কা থেকে উত্তরণে আল্লাহর স্মরণাপন্ন হতে বাধ্য। বিপদ-মহামারিসহ যাবতীয় সমস্যার সমাধানে কুরআন-সুন্নাহর নসিহত গ্রহণ ও আমলে সালেহ-এর অধিকারী ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে এসব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আর বর্তমান সময়ে তা খুবই জরুরি।

> সঙ্কট উত্তরণে আল্লাহর সাহায্য
– বিপদ-আপদের চরম মুহূর্তে সব মানুষের সবচেয়ে প্রধান কাজই হলো ধৈর্যের সঙ্গে একান্তভাবে মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া। আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া। দোয়া করা। কাকুতি-মিনতির সঙ্গে আল্লাহর কাছে রোনাজারি করা। কুরআনুল কারিমের সুস্পষ্ট ঘোষণাও তাই। আল্লাহ তাআলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে (আল্লাহর কাছে) সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)

– মহান আল্লাহ অসহায় ব্যক্তির ডাকে সাড়া দেন। তার কষ্ট দূর করে দেন। মহান আল্লাহ আয়াত নাজিল করে এ সুসংবাদের বিষয়টি জানান এবং প্রশ্ন রাখেন- আল্লাহ ছাড়া কেউ আছে কি কষ্ট লাগবে? আল্লাহ তাআলা বলেন-
أَمَّن يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَاء الْأَرْضِ أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ
‘বলুন তো কে অসহায়ের ডাকে সাড়া দেন; যখন সে (অসহায় ব্যক্তি) ডাকে এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং তোমাদের প্রত্যেককে পৃথিবীতে আগের লোকদের স্থলাভিষিক্ত করেন। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই স্মরণ কর।’ (সুরা নামল : আয়াত ৬২)

– বান্দা কীভাবে বা কোন পন্থায় সাহায্য চাইলে আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করবেন, সঙ্কট দূর করে দেবেন। তা হতে পারে দুনিয়া ও আখেরাতে। তিনি বান্দাকে পথ দেখিয়েছেন, কৌশলও শিক্ষা দিয়েছেন, যে কৌশলে আশ্রয় চাইলে সঙ্কট থেকে উত্তরণের সম্ভাবনা দেখা দেবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا عَسَى رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ يَوْمَ لَا يُخْزِي اللَّهُ النَّبِيَّ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ نُورُهُمْ يَسْعَى بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
‘মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর; বিশুদ্ধ তাওবা। আশা করা যায়, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের মন্দ কাজগুলো মুছে দেবেন আর তোমাদের সবাইকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। আল্লাহ সেদিন নবি এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদের সবাইকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবে- হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)

> সঙ্কট উত্তরণে বিশ্বনবির নসিহত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রীতি ও আদর্শ ছিল সব বিষয়ে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। তা আবার শুধু দোয়া করেই শেষ নয় বরং যখনই তাঁর সামনে কোনো সামান্য উদ্বেগের বিষয় উপস্থিত হত তখনই তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং দোয়া নিয়োজিত থাকতেন। হাদিসে এসেছে-
– হজরত হুজাইফা রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে যখন কোনো উদ্বেগ সৃষ্টিকারী বিষয় উপস্থিত হত; তখনই তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (আবু দাউদ)

– হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভ্যাস ছিল- প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ার রাত হলে তাঁর আশ্রয়স্থল হত মসজিদ যতক্ষণ না ঝড়ো হাওয়া শান্ত হত। আর যখন আকাশে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটত তখনও তাঁর আশ্রয়স্থল হল নামাজস্থল (অর্থাৎ তিনি এ সঙ্কটময় মুহূর্তে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং শঙ্কামুক্ত হওয়ার জন্য নামাজ অব্যাহত রাখতেন) যতক্ষণ না সূর্য বা চন্দ্র গ্রহণমুক্ত হয়ে যেত।’

> সঙ্কট ও শঙ্কায় দোয়া
সঙ্কট কিংবা প্রচণ্ড শঙ্কায় মুমিনের অনত্যম অনুপ্রেরণা দোয়া ইউনুস। চরম বিপদের সময় হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম যেভাবে আল্লাহর কাছে নিজেকে সর্ম্পন করে দিয়েছিলেন। বিপদের মুহূর্তে সবার জন্য এ তাওবা-ইসতেগফার, আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া দোয়া ও রোনাজারি করা। আর এ দোয়া ও সুরাগুলো বেশি বেশি পড়া-
– لَا إِلَهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লা আংতা সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ জালিমিন।’
অর্থ : ‘তুমি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ আমি গোনাহগার।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৮৭)

– نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ
উচ্চারণ : নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুং কারিব।
অর্থ : ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে সাহায্য ও আসন্ন বিজয়।’ (সুরা সফ : আয়াত ১৩)

> গোনাহ পরিহার করা
সঙ্কট ও শঙ্কা মুক্ত হওয়ার জন্য দ্বিতীয় প্রধান কাজ হলো গোনাহ ছেড়ে দিয়ে মহান আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া। আ তাতে মহান আল্লাহ বান্দাকে সঙ্কট ও শঙ্কায় আশ্রয় দিয়ে থাকেন। গোনাহমুক্ত জীবনই মানুষকে দিতে পারে নিরাপত্তা ও শান্তি।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সুখ-দুঃখ, সঙ্কট, শঙ্কা কিংবা সম্ভাবনাসহ সব সময় আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া। সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণ করা। গোনাহের কাজ ছেড়ে দেয়া। আর তাতেই মুমিন বান্দার জন্য রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ নিরাপত্তা ও আশ্রয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর কাছে সাহায্য লাভে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মেনে তাওবা-ইসতেগফার ও ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

নদী বন্দর / জিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com