চলতি বিপিএলের গ্রুপ পর্বের খেলাগুলোতে একের পর এক ব্যাটিং অর্ডার শাফল করে গেছে সাকিব আল হাসানের দল ফরচুন বরিশাল। টানা দুই ম্যাচে একই ব্যাটিং অর্ডারে মাঠে নেমেছে দলটি, এবারের আসরে তেমন কোনো রেকর্ড নেই বরিশালের।
একই ধারাবাহিকতা দলটি রেখেছে বিপিএলের প্লে অফের একমাত্র এলিমিনেটর ম্যাচেও। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে প্রতিপক্ষকে চমকে দিয়ে নতুন ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে মাঠে নামে দলটি। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এদিন অবশ্য নতুন ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে বরিশাল ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ১৭০ রান। নিজেদের বিপিএলের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে রংপুরকে আটকে রাখতে হবে এই রানের মধ্যে। অন্যদিকে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিতে হলে রংপুরকে করতে হবে ১৭১ রান।
যেখানে ওপেনিং করতে নামেননি দলটির নিয়মিত ওপেনার আনামুল হক বিজয়। বরং দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া স্পাইসম্যান খ্যাত আন্দ্রে ফ্লেচারের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এবারের আসরে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করা নিজের সেরাটা জমিয়ে রেখেছিলেন এলিমিনেটর ম্যাচের জন্য। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন মিরাজ। অপরপ্রান্তে ফ্লেচার ছিলেন দর্শক হয়ে।
প্রথম পাওয়ারপ্লেতে বরিশালের পক্ষে বেশিরভাগই রানই আসে অবশ্য মিরাজের ব্যাট থেকে। মাত্র ১৯ বলে ৩৪ রানে পাওয়ারপ্লেতে অপরাজিত থাকেন তিনি। অন্যদিকে ফ্লেচার আউট হয়ে ফেরেন ১৬ বলে ১২ রান করে।
পাওয়ারপ্লের পরের দুই ওভারে রানের গতি কিছুটা স্লথ হয় বরিশালের। মাহমুদউল্লাহও মাঠে নেমে শুরুতে ধীরে খেলতে থাকেন। প্রথম ৯ বল থেকে করেন ৪ রান। মিরাজও এই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে স্ট্রাইক রোটেট করে খেলতে থাকেন। রাকিবুলকে দুই চার মেরে মাহমুদউল্লাহ রানের গতি বাড়াতেই অপর প্রান্ত থেকে মিরাজও আক্রমণ করতে থাকেন।
দুইজনে এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে ৬৯ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। এরমধ্যে মিরাজ ৩৫ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন। মাহমুদউল্লাহও ২১ বলের মধ্যে ১টি ছয়ে ও ৪টি চারে খেলেন ৩৪ রানের দারুণ ইনিংস। মাহমুদউল্লাহ ফিরলে ভাঙে জুটিটি। দাসুন শানাকা বল হাতে নিয়েই রংপুরকে রিয়াদের উইকেটটি এনে দেন।
এদিন সাকিব বা রাজাপাকসে নয় চারে নামিয়ে দেওয়া হয় হার্ডহিটার করিম জানাতকে। রিয়াদের বিদায়ের পর বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ফেরেন মিরাজও। আউট হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৯টি চার ও ১টি ছয়ে ৬৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন এই ব্যাটসম্যান। রিয়াদের মতো মিরাজের উইকেটটিও তুলে নেন শানাকা। মিরাজের বিদায়ের পর মাঠে নামানো হয় লঙ্কান হার্ডহিটার ভানুকা রাজাপাকসেকে।
তবে দুইজনে স্লগ ওভারের সময় মাঠে নামলেও ব্যাট হাতে ঠিক ঝড় তুলতে ব্যর্থ হন। ১৬ এবং ১৭তম এই দুই ওভার থেকে এই দুই ব্যাটসম্যান তুলতে পারেন মাত্র ৯ রান। অবশেষে ১৮তম ওভারে এসে শানাকার ওভার থেকে জানাত ১টি করে চার-ছয়ে ১৪ রান তোলেন। তবে পরের ওভারে ডোয়াইন ব্রাভো এসে দেন মাত্র ৬ রান।
শেষ ওভারে হাসান মাহমুদ থেকে ১৫ রান আদায় করে নেওয়াতে বরিশালের স্কোর ১৭০ স্পর্শ করে। জানাত ২৫ বলে ৩টি চার ও ১টি ছয়ে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্য প্রান্তে রাজাপাকসে ১টি করে চার-ছয়ে ১০ বলে করেন ১৭ রান।
রংপুরের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে বেশি সফল ছিলেন শানাকা। এই লঙ্কান বোলার ২৩ রানের বিনিময়ে নেন ২ উইকেট। এছাড়াও রাকিবুল হাসান ৩২ রানের বিনিময়ে নেন ১টি উইকেট।
নদী বন্দর/এসএইচ