1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ভূমিহীন কৃষক আজাদের তরমুজ চাষে বাম্পার ফলন - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন
নোয়াখালী প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩
  • ৮৪ বার পঠিত

আমি এমন একজন কৃষক যার এক শতাংশ জায়গাও নাই। কৃষিকাজ বহু কষ্ট করে ধরে রেখেছি। চাষ করেই আমার সংসারে খাবার জোটে। অভাবের সংসার তাই অন্যের কাছ থেকে ধারদেনা করে সবজি চাষ করছি। বহু সবজি মাইর খেয়েছি। মুরব্বিদের দোয়ায় এখনও টিকে আছি। এবার আশা করছি তরমুজ বিক্রি করে চার-পাঁচ শতক জায়গা কিনব।’

এভাবেই নিজের সংগ্রামের কথা জানালেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আল আমিন বাজার এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে মো. আজাদ হোসেন (৪০)। নিজের এক টুকরো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করেন তিনি। আজাদ হোসেন এ বছর ১১ একর জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ আবাদ করেছেন। এতে তার ৬ লাখ টাকা খরচ হলেও লাভের আশা করছেন ১০ থেকে ১২ লাখ। লাভের টাকা থেকে মুছতে চান ভূমিহীন পরিচয়। 

আজাদ হোসেন বলেন, ২০০১ সালে বিয়ে করে চট্রগ্রাম চলে যাই। তখন দিনে ২০০-২৫০ টাকায় দিনমজুর ছিলাম। অনেক পরিশ্রম করেছি কিন্তু কোনোভাবে পোষাতে পারি না। তাই দিনমজুরের কাজ বাদ দিয়ে কৃষিতে পুরোপুরি যুক্ত হই। প্রায় ৩৫ বছর কৃষিকাজ করি। পড়াশোনা না জানায় ভালো করতে পারি না। এবছর অনেক পরিশ্রম করে ১১ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। আশা করি আল্লাহ চাইলে এবার ভাগ্য পরিবর্তন হবে। 

আজাদ হোসেন আরও বলেন, চট্রগ্রাম-ফেনীসহ আশপাশে এই তরমুজ বিক্রি হয়। সারাদেশে তরমুজের থেকে সুবর্ণচরের তরমুজ সেরা। কম করে হলেও উত্তরবঙ্গের তরমুজ থেকে ১০ গুণ মিষ্টি। উত্তরবঙ্গের তরমুজ সাইজে বড় হলেও মিষ্টি কম। পাইকার ব্যবসায়ী সবাই আমাদের তরমুজ চেনে। যারা চেনে তারাই কেনে। তরমুজ চাষে অনেক পরিশ্রম।

সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জমিতে সময় দিতে হয়। গত বছর কিছু টাকা ছিল, গরু-ছাগল বিক্রি করেছি এবং ধার দেনা করে ১১ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করেছি। আমার ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আমার বাবা কৃষক। আমি সারাবছর কৃষিকাজ করি। এভাবেই আমাদের জীবন চলে। কৃষি অফিস সহযোগিতা করে। নাহলে আমাদের চলা কঠিন হয়ে যেত। 

চরওয়াপদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান ভূঁইয়া বলেন, চরওয়াপদা ইউনিয়নে হাজার হাজার একর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। বেশিরভাগ ভূমিহীন। অন্যের জমি এককালীন টাকা দিয়ে বর্গা নিয়ে তারা আবাদ করছেন।

আজাদের এক ইঞ্চি জমিও নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষির ওপর ব্যাপক জোর দিয়েছেন। এক ইঞ্চি জমিও যেন আবাদের বাইরে না থাকে। এতে করে কৃষক আজাদ যেমন স্বাবলম্বী হবেন ঠিক তেমনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে। 

সুবর্ণচর উপজেলার কৃষি কর্মকতা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, সুবর্ণচরে অন্যতম তরমুজ চাষি হলেন আজাদ। তিনি ভূমিহীন কৃষক। তরমুজ আবাদ করে কৃষক আজাদ জমির মালিক হওয়ার আশা করছেন। সুবর্ণচরে এবছর ৪ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে।

আবাদ থেকে শুরু করে রোগবালাই আক্রমণ-বাজারজাতকরণ পর্যন্ত কৃষি বিভাগ পাশে রয়েছে। গত বছরের ন্যায় এবারও কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে। কৃষক নায্যমূল্য পাবেন এবং স্বাবলম্বী হবেন।  কৃষক স্বাবলম্বী হলে নিশ্চিতভাবে আমাদের দেশ স্বাবলম্বী হবে।

নদী বন্দর/এসএইচ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com