বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ করার লক্ষ্য নিয়ে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে ওপেনিংয়ে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল টাইগাররা। এরপর রনি বিদায় নিলেও নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যান লিটন দাস। এই দুজনের ব্যাটিংয়ে দৃঢ়তায় বাংলাওয়াশের লক্ষ্যে ইংল্যান্ডকে ১৫৯ রানের ইংল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভার থেকেই ইংলিশ বোলারদের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাটিং করেন দুই ওপেনার। শুরুটা করেন ৮ বছর পর এই সিরিজে দলে ফেরা রনি তালুকদার।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই বাউন্ডারি মেরে নিজের মনোবল চাঙা করেন তিনি। পরের ওভারে রনি-লিটন দুজনেই একটি করে বাউন্ডারি মারলে দুই ওভার শেষে সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯ রান। তাই, শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ইংল্যান্ড আদিল রশিদকে বোলিংয়ে এনে উইকেটের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন।
তবে আজ যেন ইতিহাস রচনাতেই বদ্ধপরিকর ছিল বাংলাদেশ। ফলে উইকেট না হারিয়ে রশিদের ওভারটা দেখেশুনে ব্যাট করে মাত্র ৪ রান নেয় টাইগাররা। জোফরা আর্চারের চতুর্থ ওভারে এক বাউন্ডারিতে ৮ রান তোলে বাংলাদেশ। আদিল রশিদের পরের ওভার থেকে আসে ৭ রান।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আর্চারের দ্বিতীয় বলেই বাউন্ডারি হাঁকান রনি। তবে তার ঠিক পরের বলেই ক্যাচ ফেলে রনিকে জীবন দেন বেন ডাকেট। ফলে ৬ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৪৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। তবে পাওয়ার প্লের এক ওভারে পরেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন রনি তালুকদার।
আদিল রশিদের করা অষ্টম ওভারে এসে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রনি। বিদায়ের আগে ২২ বলে তিন বাউন্ডারিতে ২৪ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে লিটনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন আগের দুই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাট করা নাজমুল হোসেন শান্ত।
এই দুজন মিলে ইংলিশ বোলারদের ওপর চড়াও হন। এরমধ্যে ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশ তুলে ফেলে ৭৭ রান। মঈন আলীর করা ১১তম ওভারে এসে ছয় মেরে হাত খোলেন শান্ত। পরের ওভারে আর্চারের পরপর ২ বলে দুই চার মারেন লিটন। রেহান আহমেদের করা পরের ওভারে এক রান নিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি পূরণ করে লিটন।
ওই ওভারের শেষ বলে রেহানকে মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলেন শান্ত। পরের ওভারে জফরা আর্চারকে চারের পর ছক্কা মারেন লিটন। এরপর রশিদকে ইনসাইড আউটে আবারও চার মেরে ১৫ ওভারে দলের রান ১৩১ এ নিয়ে যান তিনি। তবে শুরুর সেই আক্রমণ শেষ দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
ডেথ ওভারে জর্ডান ও স্যাম কারানের বোলিং তোপে ১৫ বল ধরে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি তারা। ফলে ৫১ রানে জীবন পাওয়া লিটন ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। শেষ পর্যন্ত থাকলে হয়তো সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও থাকতো ভালোভাবেই। তার বিদায়ে নাজমুলের সঙ্গে ৮৪ রানের জুটির উঠেছে ৮৪ রান, আগে ব্যাটিং করে তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ।
এরপর নাজমুল শান্তও ফিফটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে ইংলিশ বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাংলাদেশের ইনিংস নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানেই থেমে যায়। পুরো সিরিজে ব্যাট হাতে আলো ছড়ানো শান্ত আজও ৩৬ বলে ১ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৪৭ রান করেন, কাপ্তান সাকিবের অবদান ৬ বলে ৪ রান।
নদী বন্দর/এসএইচ