শিক্ষার উন্নয়নের জন্য শুধু অবকাঠামো বা বিল্ডিং বানালেই হবে না, একাডেমিক কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে। মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। আরও এই মাস্টারপ্ল্যান ঠিক করে দেবে শিক্ষার মান কেমন হবে। একই সঙ্গে গবেষণার সংস্কৃতি বাড়াতে হবে।
সোমবার (৫ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দিনব্যাপী বাংলাদেশ এডুকেশন এক্সপো-২০২৩ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের চাকরির ক্ষেত্রে যে প্রত্যাশা আর চাকরি দাতার যে প্রত্যাশা তার বিস্তার ফারাক থেকে যাচ্ছে, এই দূরত্ব কমাতে আমাদের জয় দেওয়া দরকার।
এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এ মেলার আয়োজন করে। এতে ৬০টির বেশি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিটিউটসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণা, প্রকাশনা ও উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলা এই এক্সপো উন্মুক্ত থাকবে সবার জন্য।
তিনি আরও বলেন, দেশের শিক্ষাখাতে প্রতি বছরই বরাদ্দ বাড়াচ্ছে সরকার। জিডিপির হিসেবে এ হার কম হলেও সামগ্রিক হিসেবে এটি বাড়ছে। এখন আমাদের গবেষণায়ও বরাদ্দ বেড়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে দেশ গড়ার কাজে শিক্ষার্থীদের আত্মনিবেদন করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রধান হাতিয়ার শিক্ষা। তাই আমাদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে আমাদের গবেষণাসহ সকল খাতে জোর দিতে হবে।
প্রচলিত জনপ্রিয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি আমাদের ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস ও দর্শনের মতো বিষয়গুলোয় জোর দিতে হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের এসব বিষয়ে জোর দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো বিভাগ কখনো বন্ধ হয়েছে বলে আমি শুনিনি বরং বিভাগ ভেঙে নতুন বিভাগ হয়েছে, নতুন চেয়ারম্যানের সংখ্যা বেড়েছে। এটি দেশের উচ্চশিক্ষায় কতটুকু ভূমিকা রাখছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। একই সাথে যুগের সাথে এর সমন্বয় করা দরকার।
শিক্ষার্থীদের কর্মজগতে প্রবেশের জন্য নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ডা. দীপু মনি বলেছেন, যেমনভাবে শিক্ষার্থীরা সবাই উদ্যোক্তা হবে না, তেমনি যত সংখ্যক স্নাতক স্নাতকোত্তর বের হচ্ছেন তার সবাই দেশ এবং বিদেশজুড়ে চাকরিও পাবেন না। বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি ভাষাজ্ঞান, সফটস্কিল, সমস্যা সমাধান দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতাসহ সবখাতেই আমাদের তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, নিয়োগকর্তা এবং প্রার্থীর দক্ষতার সমন্বয় করতে হবে। তাহলে কর্মজগতে আমাদের তরুণরা পিছিয়ে থাকবে না। শুধু চাকরি খুঁজলে হবে না—তরুণদের তাদের দক্ষতাও বাড়াতে হবে। সেজন্য আগামী প্রজন্মকে আমরা প্রাথমিক-মাধ্যমিক থেকেই দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ করছি। এর সুফল এখন না পাওয়া গেলেও ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে ২০২৫ সালের মতো সময় লাগবে। এর সুফল তার পরবর্তী সাত অথবা আট বছর পর পাওয়া যাবে এবং সেজন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশের উচ্চশিক্ষায় ইন্ড্রাস্ট্রির সাথে একাডেমিয়ার সমন্বয় করতে।
নদী বন্দর/এসএম