কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এরমধ্যেই প্রদেশের প্রিমিয়ার, সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং নীতিনির্ধারকদের সবকিছু মিলিয়ে চলতে অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে।
করোনা মহামারির এই সময়ে অনেকেই বাড়িতে বসে কাজ করেছেন। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর গতি আগের মতো তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। লকডাউনে থমকে আছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। ফলে সবকিছু মিলে সরকার ও করপোরেশনের বাজেট মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতিতে টরন্টোর ২০২১ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের ৯০ কোটি ডলার অন্য সরকার থেকে সংস্থান করা হবে। কর্মকর্তারা বলছেন, ২২০ কোটি ডলারের ঘাটতির মুখে দাঁড়িয়ে চলতি বছরের বাজেট প্রস্তুত করতে হয়েছে তাদের। তবে ইউনিয়নের বাইরে থাকা কর্মীদের বেতন বন্ধ রেখে এ ঘাটতি ৫৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার কমাতে সক্ষম হয়েছেন তারা।
সিটি কর্মকর্তাদের মতে, অবশিষ্ট ১৬০ কোটি ডলার ঘাটতি পূরণে সেফ রি-স্টার্ট কর্মসূচির আওতায় ৭৪ কোটি ডলার এরই মধ্যে পাওয়া গেছে। বাকি ৮৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার বিভিন্ন স্তরের সরকারের কাছ থেকে পাওয়ার আশা করছে টরন্টো।
শরণার্থীদের আশ্রয়ণের জন্য ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার পাওয়া যাবে বলে আশা করছে সিটি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বাড়তি ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাওয়া যাবে প্রাদেশিক সরকারের কাছ থেকে। সব মিলিয়ে ঘাটতি কমে দাঁড়াবে ১ হাজার ৩৯৫ কোটি ডলারের পরিচালনা বাজেটের সাত শতাংশের কাছাকাছি।
সিটি কর্মকর্তারা বলছেন, ঘাটতি পূরণে যদি ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকার এগিয়ে না আসে তাহলে মূলধনী প্রকল্পগুলো হয় বাতিল করতে হবে না হয় পিছিয়ে দিতে হবে এবং রিজার্ভ তহবিল থেকে অর্থ ধার করতে হবে।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালেও সিটি কর্তৃপক্ষ ১৮০ কোটি ডলারের ঘাটতিতে পড়েছিল। কিন্তু ৫৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের নিজস্ব সঞ্চয় ও অর্থনীতি পুনরায় চালু করতে প্রদেশকে দেয়া ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের কেন্দ্রীয় তহবিলের সাহায্যে সে ঘাটতি কাটিয়ে উঠেছিল টরন্টো সিটি কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু ২০২১ সালে টরন্টো ট্রান্সপোর্ট কমিশন (টিটিসি) একাই ৭৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারের ঘাটতিতে পড়বে। নাগরিকরা যাতে শারীরিক দূরত্ব পরিপালন করেন সেজন্য অতিরিক্ত ২৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ব্যয় করতে হবে টরন্টোকে।
বাজেট প্রণয়নকারী দলের প্রধান গ্যারি ক্রফোর্ড বলেন, আমাদের জানামতে এটাই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে কঠিন বাজেট মৌসুম। কর না বাড়িয়ে নাগরিকদের দেয়া সেবাগুলো অব্যাহত রাখতে আমাদের অনেক কাজ করতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, কানাডার সরকার করোনা মহামারির প্রথম থেকেই দেশটির নাগরিকদের সুস্বাস্থ্য ও অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যা এখনো বলবত রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অব্যাহত করোনার এই সময়ে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে। অন্যদিকে শুরু হওয়া ভ্যাকসিন প্রয়োগও ধীরে ধীরে কানাডিয়ানদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভূমিকা রাখবে।
নদী বন্দর / এমকে