দেওয়ানি মামলা বিচারের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের বিচারকদের আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার বাড়িয়ে সংসদে একটি বিল পাস হয়েছে। আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার ক্ষেত্র ভেদে বিদ্যমান আইনের ছয় থেকে সাত গুণ বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘দ্য সিভিল কোর্টস (সংশোধন)–২০২১’ বিলটি সংসদে প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
একজন সহকারী জজ এতদিন দুই লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের (সম্পত্তি বা অর্থে যে অঙ্কের টাকা নিয়ে বিরোধ) মামলা নিষ্পত্তি করতে পারতেন। এখন সেই এখতিয়ার বাড়িয়ে ১৫ লাখ টাকা করার কথা বলা হয়েছে পাস হওয়া বিলে।
একইভাবে জ্যেষ্ঠ সহকারী জজের বিচারিক এখতিয়ার চার লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা এবং আপিল শুনানির ক্ষেত্রে জেলা জজের এখতিয়ার পাঁচ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ কোটি টাকা করা হয়েছে।
পাঁচ কোটি টাকার কম মূল্যমানের কোনো মামলায় যুগ্ম-জেলা জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল বা কার্যক্রম হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন থাকলে তা জেলা জজ আদালতে স্থানান্তরের বিধান রাখা হয়েছে পাস হওয়া বিলে।
আগে পাঁচ কোটি টাকার কোনো আপিল হলে হাইকোর্টে যাওয়া লাগলেও আইন সংশোধন হলে জেলা জজ সেই আপিল শুনানি করতে পারবেন বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে আইনমন্ত্রী ২০১৬ সালের সংশোধনী উচ্চ আদালতে বাতিল হওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, প্রশাসনিক জটিলতাসহ বিচারপ্রার্থী জনগণের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে সরকার আইনটি সংশোধন আবশ্যক মনে করছে।
২০১৬ সালে আইন করে সিভিল কোর্টগুলোর বিচারিক এখতিয়ার বাড়ানো হলেও হাইকোর্ট তা স্থগিত করে দেন। ফলে নতুন করে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।
বিলে ২০১৬ সালের ওই সংশোধন রহিত করে একটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। সরকার ২০১৬ সালেও টাকার অঙ্কে বিচারিক এখতিয়ার একই পরিমাণ বাড়িয়ে আইন সংশোধন করেছিল। কিন্তু তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন হলে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সরকারের ওই গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেয়।
নদী বন্দর / জিকে