মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ার মরুভূমিতে সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পুঁতে রাখা একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ১৪ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও আটজন। দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা সানা এ তথ্য জানিয়েছে।
সানা’র বরাত দিয়ে ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়েছে, রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাকা মরুভূমিতে বেসামরিক মানুষজন ট্রাফল ফল সংগ্রহ করার সময় আইএস সন্ত্রাসীদের রেখে যাওয়া একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
সিরিয়ার মরুভূমি বিশ্বের সেরা মানের ট্রাফল ফল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। ট্রাফল হচ্ছে মৌসুমী ফল। ১৩ বছর ধরে চলা যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত সিরিয়ায় উল্লেখযোগ্য রাজস্ব নিয়ে আসে ট্রাফল। তবে ট্রাফল সংগ্রহে ঝুঁকি বেশি বলে প্রায়ই সতর্ক করে কর্তৃপক্ষ।
ট্রাফল সংগ্রহকারীরা সাধারণত প্রত্যন্ত অঞ্চলে বড় গ্রুপ হয়ে কাজ করে, আইএস জঙ্গিরা প্রায়ই তাদের ওপর হামলা চালায়। মরুভূমি থেকে তাদের অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় কিংবা হত্যা করা হয়।
তারপরও প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ট্রাফল সংগ্রহকারীরা উত্তর সিরিয়ার বিস্তীর্ণ মরুভূমি, যেটি আইএসের আস্তানা হিসেবে পরিচিত ও ল্যান্ডমাইন দিয়ে ভরা থাকে, সেখান থেকে সুস্বাদু খাবারটি সংগ্রহ করতে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকেন।
মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সামরিক অভিযানে ২০১৯ সালের মার্চে সিরিয়ায় নিজেদের সর্বশেষ ঘাঁটি হারায় আইএস। তবে জিহাদি গোষ্ঠীর অবশিষ্ট অংশ এখনো লুকিয়ে আছে সিরিয়ার মরুভূমিতে। সেখান থেকেই মারাত্মক আক্রমণ চালায় আইএস। তারা বেসামরিক নাগরিক, কুর্দি-নেতৃত্বাধীন বাহিনী, সিরিয়ার সরকারি সৈন্য ও ইরানপন্থী যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালানোর জন্য এ ধরনের আস্তানা ব্যবহার করে, পাশাপাশি প্রতিবেশি ইরাকেও হামলা চালিয়ে থাকে।
সিরিয়ায় এক দশক ধরে চলা যুদ্ধে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের জীবনহানি ঘটেছে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থীশিবিরে জীবন যাপন করছে।
নদী বন্দর/এসএকে