গত বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্টে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। যাকে কেন্দ্র করে এখন ক্ষোভে ফুঁসছে ভারতের মুসলামনরা। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে এই আইনের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এবার এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
গত ৩ এপ্রিল ভারতের পার্লামেন্টে বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হওয়ার পর উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের ভোটে ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল পাস হয়। দীর্ঘ বিতর্কের পর ১২৮-৯৫ ভোটে বিলটি পার্লামেন্টের শেষ বৈতরণী পার করে। এমনকি দেশটির রাষ্ট্রপতি তাতে সইও করেছেন।
এতদিন মুসলিম সম্প্রদায়ের দানকরা ধর্মীয়, শিক্ষা ও সেবামূলক কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তি যা ওয়াকফ নামে পরিচিত ছিল। এবং এই সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরযোগ্য ছিল না। আর ওয়াকফ বোর্ডে থাকত কেবল মুসলমানরা। তবে নতুন বিলে ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিম সদস্য অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। যার ফলে মুসলিমদের দানকৃত মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রের মতো ধর্মীয় সম্পদগুলোতে সরকারি হস্তক্ষেপ ও দখলের পথ তৈরি হয়েছে।
ভারতের মুসলামদের স্বার্থ বিরোধী এই আইনের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘ভারতে মোদি সরকার মুসলমান বিরোধী আরো একটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
নতুন আইন পাস করে তারা মুসলমানদের ‘ওয়াক্ফ’ সম্পত্তি পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিমদেরও রাখার এবং এসব সম্পত্তিতে সরকারের সরাসরি খবরদারীত্বের বিধান করেছে। এই আইন ব্যবহার করে পুরোনো মসজিদসহ মুসলমানদের বহু ঐতিহাসিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ভারতে হিন্দু মন্দির পরিচালনা কমিটিতে অন্য ধর্মাবলম্বীরা স্থান পান না। এই প্রশ্ন সেখানে উঠেছে যে, ওয়াক্ফ বোর্ডে তাহলে অমুসলিমদের রাখা হবে কেন?’
ওয়াকফ বিল নিয়ে আসিফ নজরুল আরও লিখেন, ‘এই আইন ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষের বিরুদ্ধে ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর ক্রমাগত বৈষম্য ও নিপীড়নের আরেকটি অধ্যায় রচনা করবে।’
তিনি শেষে যোগ করেন, ‘পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এরাই আবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ভুয়া অভিযোগ তুলে যাচ্ছে অব্যাহতভাবে।’
নদীবন্দর/এসএইচ