পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের ‘আনন্দ শোভাযাত্রার’ জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতিতে’ আগুন দেওয়ার ঘটনায় সিসিটিভি ভিডিওতে মাস্ক পরা যে যুবককে দেখা গেছে, তিনি ঢাবির আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মী বলে ধারণা ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের।

রোববার (১৩ এপ্রিল) আগুন দেওয়ার ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওই যুবক থাকতেন মাস্টারদা সূর্যসেন হলে। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের অনুসারী হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। গতবছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাকে আর হলে দেখা যায়নি।

আরবি বিভাগের ওই ব্যাচের শিক্ষার্থী শরীফ আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবাই তাকে ভিডিও দেখে চিনতে পেরেছি। সে কয়েকদিন আগে বিজয় ৭১ হলের সামনে এসে ছাত্রলীগের স্লোগান দিয়ে গেছে। তার ফেইসবুক কমেন্ট ও পোস্ট এখনও মারাত্মক লেভেলের আক্রমণাত্মক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদেরও মনে হয়েছে ওই ছেলে হয়ে থাকতে পারে। আমরা বিষয়টা গুরুত্বের সাথে দেখছি। এখন তদন্ত চলছে।’

রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রমনা বটমূলে ছায়নটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত ক্লোজ। খুব নিকটে পৌঁছে গেছি ডিটেকশনের ক্ষেত্রে। আমরা আশা করতেছি (সোমবার) সকাল ৯টায় শোভাযাত্রা শুরুর আগেই সন্তোষজনক পর্যায়ে ডিটেকশনের ক্ষেত্রে চলে যাব। সম্ভব যদি হয়, বাই দিস টাইম, দুর্বৃত্তদের অ্যারেস্ট করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।’

এর আগে, শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে চারুকলায় শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ এবং ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে শান্তির পায়রা মোটিফটি আংশিক পুড়লেও, পুরোপুরি পুড়ে যায় ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফটি। পরে এদিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়।

নদীবন্দর/জেএস