হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সুতাং নদীর ব্রিজটি বিগত ১০ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সুতাং বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ সুতাং ব্রিজ। প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম প্রাচীন আমলের এই সেতুটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক আগেই ব্রিজ নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়ে ছিল। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে এর নির্মাণকাজ স্থগিত রাখা হয়েছিল।
সরজমিনে দেখা যায়, সুতাং ব্রিজের মধ্যাংশ ভেঙে কাজ শুরু করা হয়েছে। ফলে এ ব্রিজে বর্তমানে সব ধরনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর উত্তর পাশে মাটি ফেলে একটি বিকল্প রাস্তাও নির্মাণ করা হয়েছে। যেটি দিয়ে ছোট যানবাহন ও মানুষ যাতায়াত করছেন।
কিন্তু যে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্বল। সামান্য বৃষ্টি হলেই যেকোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে। গত বছরের প্রথমদিকেও ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু করার চেষ্টা করেছিলেন ঠিকাদার, তখনও একই বিকল্প রাস্তাটি প্রবল বৃষ্টিতে তলিয়ে গিয়েছিল।
সুতাং এলাকার স্থানীয় সাংবাদিক সৈয়দ শাহান শাহ জানান, সুতাং ব্রিজ ভেঙে আবার নির্মাণ করতে বেশ সময় লাগবে। এলাকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে নদীর ওপর বিকল্প সড়কটি আরো মজবুত করে বানানো উচিত।
এ ব্যাপারে নুরপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মো. মুখলিছ মিয়া বলেন, ব্রিজ নির্মাণ বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। তবে বিকল্প যে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়েছে, তা বেশ দুর্বল।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাজেদুল ইসলাম জানান, নতুন করে ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। গত বছরই নতুন ব্রিজ নির্মাণ করতে পাঁচ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছিল। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় আমরা কাজ শুরু করতে পারিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরই কাজ শেষ হবে আশা করছি।
বিকল্প সাকোর বিষয়ে তিনি বলেন, টেন্ডারে আলাদা সাকো নির্মাণের বাজেট নেই।সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে নদীর ওপর সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছি। আবারও যদি সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
উল্লেখ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ ব্রিজটিতে কোনো গাড়ি উঠলেই কেঁপে উঠতো। গত ২-৩ বছর ধরে ব্রিজ দিয়ে কেবল মাত্র হালকা যানবাহন চলাচল করতো। তারপর পুরাতন সেতুটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য টেন্ডার আহ্বান করে উপজেলা প্রকৌশল অফিস। ঠিকাদার পুরাতন সেতুটি ভাঙার জন্য ওই ব্রিজের পাশেই বিকল্প সড়ক ও সেতু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ২৯ এপ্রিল প্রবল বৃষ্টিতে বিকল্প সড়ক ও সেতুটি নদীতে তলিয়ে যায়।
নদী বন্দর / এমকে