দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) সুলতানুজ্জামান মো. সাহেল উদ্দিন এবং তার বাবা মো. কমর উদ্দিনের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লক করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল, দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান কর্তৃক একটি স্মারকের মাধ্যমে এ আদেশটি পাঠানো হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা এবং পরিচয়পত্র ব্লক করার আবেদনটি দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে পেশ করা হয়। এরপর আদালত এটি পর্যালোচনা করে মঞ্জুর করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ অনুসন্ধান কার্যক্রমের স্বার্থে নেওয়া হয়েছে এবং আদেশটি বাস্তবায়নের জন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
দুদক সূত্রে জানা গেছে, মেজর জেনারেল (অব.) সুলতানুজ্জামান মো. সাহেল উদ্দিন এবং তার বাবা কমর উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। বিএমটিএফ এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ এবং দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা এবং এনআইডি ব্লক করার বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক বিচারিক আদালতে আবেদন করা হয়।
আদালত এই আবেদন মঞ্জুর করে। এছাড়া, ওই চিঠিতে বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন-প্রশাসন), স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ মালিবাগ, ঢাকাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন তারা মেজর জেনারেল (অব.) সুলতানুজ্জামান এবং তার পিতার বিদেশ যাত্রা রোধ করতে পারে।
এছাড়া, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মহাপরিচালককেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
অপরদিকে, এই বিষয়টির ফটোকপিসহ আদেশের অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ আদেশের ফলে মেজর জেনারেল (অব.) সুলতানুজ্জামান এবং তার বাবা বিদেশ যেতে পারবেন না, এবং তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক হওয়ার ফলে তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো সরকারি বা ব্যক্তিগত কার্যক্রমেও বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের এই পদক্ষেপটি দেশের দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অভিযোগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
নদীবন্দর/জেএস