নদীর এ কূল ভাঙে, ও কূল গড়ে। চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীর পশ্চিম পাড় গড়লেও ভাঙনের মুখে পড়েছে অন্য পাড়। দামুড়হুদা উপজেলার নতুন হাউলী গ্রামের প্রায় চার একর মালিকানা জমি গ্রাস করেছে নদী। ভাঙ্গনের হুমকির মুখে পড়েছে ২৫-৩০টি বসতবাড়ি। এমন অবস্থার ফলে ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের বাড়ির মালিকরা।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা সদরের পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া মাথাভাঙ্গা নদীর পূর্ব দিকে নদীর কূল ঘেঁষে রয়েছে নতুন হাউলি ও পুরাতন বাস্তপুর গ্রাম। এই দুটি গ্রামের মধ্যে নতুন হাউলি গ্রামের নদীপাড়ের প্রায় চার একর মালিকানা জমি ভাঙনের ফলে মাথাভাঙ্গা নদীতে চলে গেছে। এখন প্রায় ২৫-৩০টি বসতবাড়ির সীমানা ঘেঁষে ৪০-৫০ ফুট গভীর হয়ে ভাঙন ধরায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এসব বাড়ির মালিকরা।
এখনই ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুমে বাড়িগুলৌ ধসে পড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা। ভাঙ্গন রোধে এখানে বেড়ি বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী মহল। তবে দামুড়হুদা সদরের মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত সেতু সংলগ্ন দক্ষিণ দিকের বিকল্প সড়টির কাজ সম্পন্ন হলে রক্ষা পাবে এসব বসতবাড়ি।
২০১৮ সালে তৎকালীন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসানের উদ্দ্যেগে মাথাভাঙ্গা নদীর সেতু সংলগ্ন স্থান থেকে হাউলির আব্দুল হালিমের রাইসমিলের মোড় পর্যন্ত একটি বিকল্প সড়কের কাজ শুরু করে। দামুড়হুদা দশমী পাড়াবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে ওই বছরই সড়কের মাটি ভরাটের কাজ দামুড়হুদার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্পন্ন করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসান বদলি হয়ে গেলে সেই থেকে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও হাউলীর সীমানা থেকে বাকি অংশ সড়কের কাজ স্থগিত রয়েছে। আগামি বর্ষা মৌসুমের আগে সড়কটির নির্মানকাজ সম্পন্ন করলে হুমকির মুখে থাকা বসত বাড়িগুলো ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। না হলে এসব বসতবাড়ি দ্রুত নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।
নতুন হাউলী গ্রামের সীমানা শরিফুল আলমের বাড়ির পর থেকে আব্দুল হালিবের রাইসমিল মোড় পর্যন্ত আনুমানিক ৫-৬শ ফুট লম্বা হয়ে প্রায় ৪০-৫০ফুট গভীর হয়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এই ভাঙনের মুখে রয়েছে দৌলত হেসেন, আমজাদ হেসেন, সিদ্দিক আলি, নাজমুল হোসেন, ডালিম হোসেন, মুন্না হোসেন, ইদ্রিস আলী, বজলুর রহমান, আব্দুল হান্নান, আবু সাঈদ, সুজাত ইস্রাফিল, রমজান আলীসহ ২৫-৩০টি বসতবাড়ি। গত বর্ষা মৌসুমের এসব বাড়ির সীমানায় ভাঙন ধরেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইতোমধ্যে তাদের প্রায় ১০-১২ বিঘা জমি নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এখোনি ভাঙনরোধে সরকারিভাবে ব্যবস্থা না নিলে আগামি বর্ষা মৌসুসে তাদের সবকিছু নদীগর্ভে চলে যাবে। এছাড়াও দামুড়হুদা ব্রিজের নিকট থেকে যে সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে, সেটি সম্পন্ন হলেও তাদের বাড়িগুলো বাঁচার সম্ভাবনা রয়েছে।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান বলেন, বিকল্প সড়ক ও ভাঙনের বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। বিষয়টি জানতে পারলাম। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নদী বন্দর / পিকে