বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সামনে টানা চতুর্থ দিনের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তার সমর্থকরা। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নগর ভবনের সামনে এসে জড়ো হন তারা। পরে নগর ভবনে প্রবেশের সবকটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ফলে করপোরেশনের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল ৯টা থেকেই নগর ভবনের সামনে আসতে শুরু করেন ইশরাকের অনুসারীরা। তারা নগর ভবনের সামনেই অবস্থান নেন। সেখান থেকে ইশরাক হোসেনকে অবিলম্বে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে নানান স্লোগান দিতে থাকেন। একই সঙ্গে গুলিস্তান-বঙ্গবাজার সড়ক বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে থাকেন তারা।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, নগর ভবনে তালা দেওয়ায় আমরা স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ নগর ভবনে যেতে পারছেন না। এতে নাগরিক সেবা কার্যক্রমে ব্যাহত হচ্ছে।
নগর ভবনের সামনে জাহিদ হাসান নামের এক ইশরাক সমর্থক জানান, এখন পর্যন্ত ইশরাকের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে এই বিক্ষোভ করা হচ্ছে।
শান্তিপূর্ণ এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তারা বলছেন, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ইশরাক হোসেন বৈধ মেয়র। এরপরও কেন তাকে এখনো শপথ করানো হয়নি, তার ব্যাখ্যা চাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মশামুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত ঢাকা গড়তে ইশরাকের মতো মেয়র প্রয়োজন।
হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা বলেন, যতদিন ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো না হবে ততদিন তারা নগর ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
জানা গেছে, ২৭ মার্চ ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। ১৬ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে ১০ দিনে মধ্যে গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন আদালত। ২২ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করা নিয়ে আইনগত কোনো জটিলতা আছে কি না- সেই মতামত চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় নির্বাচন কমিশন।
তবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় থেকে নির্ধারিত ১০ দিনের ঠিক শেষ দিন ২৭ এপ্রিল রাত ৯টায় আইন মন্ত্রণালয়ের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ২৮ এপ্রিল সেই গেজেট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাঠায় ইসি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আবারও আপিলের জন্য পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন আপিল করবে না জানিয়ে দেন। তারও প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও শপথের ব্যবস্থা করছে না স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
নদীবন্দর/এসএইচ