ঝড়-বৃষ্টি মওসুমের শুরু হওয়ার আগেই নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রচন্ড শিলাবৃষ্টিতে উঠতি বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও শাক-সব্জি এবং আম ও লিচুর মুকুলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধিত হয়েছে ।
স্থানীয় লোকজন ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঝড়-বৃষ্টি মওসুম শুরু হওয়ার আগেই মঙ্গলবার ভোর রাত সোয়া ৪টায় দিকে হঠাৎ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। পৌনে ৫টার দিকে বৃষ্টিপাতের সাথে প্রথমে ছোট শিল পড়তে শুরু করে। পরে ১৫ মিনিট বড় বড় শিল পড়ে। শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশী ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে নেত্রকোনা সদর, কলমাকান্দা, মদন, খালিয়াজুরি ও পূর্বধলা উপজেলায়।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাওয়ালীকোনা গ্রামের কৃষক এস এম আরিফুল হাসান পুতুল জানান, প্রচন্ড শিলাবৃষ্টিতে নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৬০ ভাগ টিনের ঘর বড় বড় শিল পড়ে ফুটো (ছিদ্র) হয়ে গেছে। এছাড়াও শিরাবৃষ্টিতে উঠতি বোরো ধানসহ বিভিন্ন শাক-সবজি ও আম লিচুর মুকুলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অনন্তপুর গ্রামের কামরুন্নাহার লিপি বলেন, ভোরে বৃষ্টি হতে শুরু করায় মনে হয়েছিল ফসলের ভাল হবে। কিন্তু শেষ দিকে ১৫/২০ মিনিট শিল পড়ায় গ্রামের বেশীর ভাগ বাড়ীর টিনের চাল ছিদ্রি হয়ে গেছে।
ফচিকা গ্রামের সিদ্দিক মিয়া বলেন, শিলে আমার শাক-সবজি ক্ষেত মাটিতে মিইশ্যা গেছে। কাইলাটী গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, এই সময় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম জমিতে সেচের পানি কম দেওন লাঘব। কিন্তু শেষ দিকে পাথর পইড়া ধান গাছের গজানো শীষ নষ্ট অইয়া গেছে।
মৌজেবালী গ্রামের কৃষক আবুল মিয়া বলেন, এইবার আম ও লিচু গাছে ব্যাপক মুকুল আইছিলো। শিলে বেশীর ভাগ মুকুল পইড়া গেছে। এ ব্যাপারে নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, নেত্রকোনা জেলা সদরসহ ৫ উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদেরকে সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত যে খবর পাওয়া গেছে, তাতে শিলাবৃষ্টিতে অনেক কৃষকের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধানের তেমন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি। কারণ এখনো ধানের শীষ বের হয়নি।
নদী বন্দর / এমকে