বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের মেরামত কাজে নতুন জিও বস্তার পরিবর্তে পুরাতন বস্তা ব্যবহারের অভিযোগে উঠেছে। এতে বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা কাজটি বন্ধ করে দিয়েছেন।
সোমবার (৮ মার্চ) সকালের দিকে যমুনা নদীর ভান্ডারবাড়ি ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর ভাঙনরোধে ২০১১ সালে উপজেলার ভুতবাড়ি গ্রাম থেকে বরইতলী পর্যন্ত প্রায় ৩০০ মিটার এলাকায় ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা। গত ১ ফেব্রুয়ারি ওই প্রকল্পের ভান্ডারবাড়ি চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে প্রায় ৮০ মিটার অংশ ভেঙে যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ভাঙন স্থানে জরুরি মেরামত কাজের জন্য মেসার্স এইচ আর কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রকল্প এলাকার কাজ শুরু করা হয়। এই মেরামত কাজের জন্য প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। বালু ও সিমেন্টের মিশ্রণ বস্তায় ভরে ভাঙন স্থানে দেড় হাজার বস্তা ফেলার কথা রয়েছে। পরে জিও চট বিছিয়ে তার ওপর সিসি ব্লক স্থাপন করা হবে।
ওই প্রকল্পের কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে হওয়ার কথা। কিন্ত সোমবার সকালে পাউবো কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা প্রায় ২০০টি পুরাতন জিও বস্তায় বালু ভর্তি করে ভাঙন স্থানে ফেলতে থাকেন। এসময় স্থানীয় জনগণের চোখে ধরা পড়ে এই অনিয়মের বিষয়টি। তখন জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে আব্দুল বারিক, মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুর রাজ্জাকসহ আরও কয়েক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, নতুন জিও বস্তায় বালু ভর্তি করে মেরামত কাজ করার কথা। কিন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদার পুরাতন জিও বস্তা ব্যবহার করছেন। এতে করে কাজ টেকসই হবে না। এ কারণে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়ে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অংশীদার সুমন হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা ভুল করে পুরাতন জিও বস্তায় বালু ভর্তি করে ভাঙন স্থানে ফেলার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্ত এ বিষয়টি জানার পর পুরাতন বস্তা পরিবর্তন করে নতুন জিও বস্তায় বালু ভর্তির কাজ চলমান রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) নিবারন চক্রবর্তী বলেন, ‘স্ত্রীর চিকিৎসা কাজে শহরের একটি ক্লিনিকে অবস্থান করছিলাম। এ সুযোগে ঠিকাদারের শ্রমিকরা প্রকল্পের কাজে অনিয়ম করেছেন। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘পাউবোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে শ্রমিকরা প্রকল্পের কাজে কিছু অনিয়ম করেছিলেন। বিষয়টি জানার পর ঠিকাদারের শ্রমিকদের দিয়ে সঠিকভাবে প্রকল্পের কাজ করানো হচ্ছে।’
নদী বন্দর / জিকে