অধিক লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কৃষকরা। নিজ পরিবারের পাশাপাশি দেশের বাজারের চাহিদা পূরণ করতে সবজিটি আবাদ করছেন তারা। ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে দেশি পেঁয়াজের গুণগত মান ভালো হওয়ায় দাম বেশি পাওয়ার প্রত্যাশা চাষিদের।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) উপজেলার মুকন্দপুর সবজির মাঠ ঘুরে দেখা যায়, প্রায় মাঠে অন্যান্য রবি শষ্যের পাশাপাশি পেঁয়াজ চাষ করছেন এখানকার কৃষকরা। প্রতিটি জমির একাংশে পেঁয়াজ আবাদ করছেন তারা। আবার অনেকেই বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ চাষ করেছেন।
চাষিরা জানান, বিঘাপ্রতি ৩০ কেজি পটাস, ৫০ কেজি ফসফেট ও ১৫ কেজি ইউরিয়া সারের পাশাপাশি গোবর মিশিয়ে পেঁয়াজ চাষের জমি তৈরি করেছেন তারা। এক বিঘা জমিতে প্রয়োজন হয় ২০ হাজার টাকার পেঁয়াজের বীজ। সবমিলিয়ে মোট খরচ হয় ৪০ হাজার টাকা। আশ্বিন মাস থেকে পেঁয়াজ রোপণ শুরু হয়। অগ্রহায়ণ মাসেই পেঁয়াজ বাজারজাত করেন তারা। গড়ে তিন মাস সময় লাগে এই ফসল ঘরে তুলতে। ভালো ফলন হলে বিঘাপ্রতি ১ লাখ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হবে।
মুকন্দপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আব্দুল হাকিম বলেন, ‘বাপ-দাদাদের দেখেছি অনান্য ফসলের পাশাপাশি বাড়ির জন্য কয়েক শতক জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করতে। বর্তমান দেশে পেঁয়াজের চাহিদা এবং দাম ভালো পাওয়ায় আমি এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। গতবারও ভালো দাম পাইছি। আশা করি এবারও দাম ভালোই পাবো।’
অপর কৃষক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে দেশে পেঁয়াজের অস্থির বাজার ছিলো। ২০০ টাকা কেজি দরেও মানুষকে পেঁয়াজ কিনে খেতে হয়েছিলো। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিলো। যার কারণে দাম বেড়ে যায়। আমরা কৃষকেরা পেঁয়াজ চাষে মনোযোগী হই। পরে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হয়। কিন্তু এখনো পাইকাররা আমাদের কাছ থেকে ভালো দামে পেঁয়াজ কেনেন। তাই কৃষকরা পেঁয়াজ চাষ করছেন।’
বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিক্সোন চন্দ্র পাল বলেন, ‘চলতি শীত মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে রবিশস্য চাষ করছেন কৃষকেরা। তার মধ্যে ৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। আমরা কৃষকদের বিনামূল্যে বিভিন্ন সবজির বীজসহ সার প্রদান করেছি। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে চলেছি।’
নদী বন্দর/এসএস