1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
কলাগাছ, বিন্না আর ঢোলকলমি লাগিয়ে তিস্তার ভাঙন রোধ - Nadibandar.com
মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৫৫ বার পঠিত

প্রতিবছর বর্ষা এলেই রাক্ষুসে হয়ে ওঠে তিস্তা। ভাঙনের কবলে পড়ে নদীপাড়ের ফসলি জমি, বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। তিস্তার এ ভাঙন রোধে নদীপাড় ও বাঁধের ধারে কলাগাছ, বিন্না, ঢোলকলমি আর ঘাস লাগিয়ে রক্ষা পেয়েছেন গাইবান্ধার চরাঞ্চলের তিন গ্রামের মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে তিস্তার ভাঙন রোধে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বছরখানেক আগে কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স অ্যাকশন গ্রুপের (ক্রাগ) সদস্যরা নদীপাড় ও বাঁধে কলাগাছ, বিন্নার থোপ, ঢোলকলমি ও ঘাস লাগায়। এ কাজের সুফলও মিলেছে বেশ। এবারের বন্যায় ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে ভাটি কাপাসিয়া, ভাটি বুড়াইল ও রাজার চরের ফসলি জমি, নানা স্থাপনা এবং বাড়িঘর। এতে স্বস্তি ফিরেছে চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে।

স্থানীয়রা জানান, কাপাসিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের ফ্লাড রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের সহযোগিতায় টেকসই বন্যা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির সদস্যরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে তিস্তার শাখা নদীর পাড়ে এ উদ্যোগ নেয়। ফলে নদীর ভাঙন রোধ করা সম্ভব। তিস্তা নদীর ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে খনন করলে চরাঞ্চলে স্থায়ীভাবে কৃষি আর মৎস্য ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে। তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার সংযোগস্থলের এক কিলোমিটার পূর্ব পর্যন্ত নদী খনন, নদীর দুই তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ড্রেজিং করে যে মাটি উত্তোলন করা হবে তা নদীর দু’পাশে ভরাট করলে সুফল পাওয়া যাবে।

তারা মিয়া নামের চরাঞ্চলের বাসিন্দা বলেন, ‘তিস্তার কারণেই বর্ষা-খরা দুই মৌসুমেই চরম দুর্ভোগের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয়। আমরা সরকারের কাছ থেকে এখন আর কোনো ত্রান চাই না। তিস্তা নদীর করাল গ্রাস থেকে স্থায়ীভাবে বাঁচতে চাই। নদীর ভাঙনের কারণে আমরা স্থায়ীভাবে কোথাও মাথা গুঁজে থাকতে পারি না। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে চরাঞ্চলের মানুষ একেবারেই বঞ্চিত। স্থায়ীভাবে তিস্তা নদীর ভাঙনরোধ করতে পারলে চরাঞ্চলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দ্রুত পৌঁছাবে। তাই প্রয়োজন নদীর খনন।

ভাটি কাপাসিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেফালী বেগম বলেন, আমরা এলাকার নারী-পুরুষ সবাই মিলে নদীপাড়ে ১ কিলোমিটার এলালাজুড়ে কলাগাছ, বিন্নার থোপ, ঢোলকলমি লাগিয়েছি। এ বছর কিছুটা হলেও ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছি।

ভাটি বুড়াইল কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স এ্যাকশন গ্রুপের (ক্রাগ) সভাপতি মো. নুর হোসেন  বলেন, ‘এভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ দিয়ে যে তিস্তার ভাঙন রোধ করা যাবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। পরীক্ষামূলকভাবে এ কাজটি করা হয়েছিল। ’

ভাটি কাপাসিয়া কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স অ্যাকশন গ্রুপের (ক্রাগ) সভাপতি মো. রাজা মিয়া বলেন, এ উদ্যোগের ফলে তিন চর এবার ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে নদী খনন করে চরাঞ্চলগুলোকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করতে হবে।

ফ্লাড রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের ফিল্ড অফিসার (এফও) ডলি সুলতানা বলেন, বন্যা সহনশীল প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ীনরা স্ব-প্রণোদিত হয়েই এসব কাজ করেছে, আমরা শুধু তাদেরকে সাপোর্ট দিয়েছি। এই কমিউনিটির অনুপ্রেরণার অন্য কমিউনিটিগুলোর বাসিন্দারাও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে মনে করি।

এ বিষয়ে কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া বলেন, বছর খানেক আগে নদীর ধারে ১কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কলাগাছ আর বিন্না লাগিয়ে এবছর ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে ওই গ্রামের মানুষ। তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয়। চরাঞ্চল রক্ষার্থে স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

নদী বন্দর/এসএইচবি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com