জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আরও একজনের বিরুদ্ধে সপ্তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আজকের কার্যদিবসে আদালতে চারজন নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে, বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট সূত্র।
সকালে মামলার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আদালতে হাজির হন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি এই মামলার শুরুতে অভিযুক্তদের একজন ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে রাজসাক্ষী হওয়ার সম্মতি দেন এবং আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়।
এর আগে, এই মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ সাক্ষ্যগ্রহণ হয় গত বুধবার, যেদিন আদালতে হাজির হন দুইজন চিকিৎসক, একজন নার্স এবং একজন স্বাস্থ্য সহকারী। তারা সবাই ঘটনার সময় হাসপাতালে দায়িত্বে ছিলেন এবং তাদের বক্তব্যে উঠে আসে সেই সময়কার ভয়াবহ চিত্র। তারা জানান, কীভাবে তারা চাপে পড়েছিলেন, কীভাবে বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের অভিযোগও উঠে আসে।
সেই সময়ের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ওইসব চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সাক্ষীরা আদালতের কাছে অভিযুক্ত তিন ব্যক্তির—শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করেন।
এদিকে একই দিনে আরও দুটি ভিন্ন মামলায় আলাদা করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় আরও দুই সাবেক কর্মকর্তাকে। গুম সংক্রান্ত একটি মামলায় হাজির হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, যিনি দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অন্যদিকে, আরেক মামলায় হাজির করা হয় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র বলছে, মামলাগুলোর প্রেক্ষাপট ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ওই সময় সংঘর্ষ, গুম, চিকিৎসা-বঞ্চনা ও সরকারি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তদন্তের আহ্বান জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় গঠিত হয় পৃথক মামলা ও বিচার কার্যক্রম।
নদীবন্দর/জেএস