সাধারণ চোখে যা উচ্ছিষ্ট, কারও কাছে তা অর্থ উপার্জনের মাধ্যম। ফেলে দেয়া এ উপাদান হতে পারে দামি প্রসাধন, অলঙ্কার কিংবা জীবন রক্ষাকারী ওষুধের উপকরণ। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও মাছের আঁশ এখন এমনই অবস্থানে পৌঁছে গেছে।
রাজশাহীর বাজার থেকে সংগ্রহ করা আঁশ কিনছেন ঢাকা-চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। করোনার কারণে বন্ধ না থাকলে রফতানিও হতে পারে বিভিন্ন দেশে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ‘মাছের আঁশ’ বিপণন হতে পারে সম্ভাবনাময় খাত।
রাজশাহী নগরীর মাস্টারপাড়া মাছ বাজার। দেখে বেছে, কান টিপেই মাছ কিনছেন ক্রেতারা। বিনে পয়সায় সে মাছের আঁশ তুলে পরিষ্কার করছেন যুবক নূর ইসলাম। স্বেচ্ছাশ্রম নয়, বিনিময়ে নিচ্ছেন ফেলে দেয়া মাছের আঁশ। সামান্য এ আঁশই তার কাছে যেন কুড়িয়ে পাওয়া ধন। সে মজুত বাড়াতে বাজারের অন্যান্য দোকানগুলো থেকেও আঁশ সংগ্রহ করছেন তিনি।
আঁশ সংগ্রহ শেষে, তা থেকে মাছের কাঁটা, পরপাখনা ও পচনশীল দ্রব বেছে নেয়া, এরপর পানিতে ধুয়ে রোদে শুকালেই সংরক্ষণ প্রক্রিয়া শেষ। নগরীর হড়গ্রাম, শালবাগান, বিনোদপুরসহ অর্ধশতের বেশি বাজারে শতাধিক মাছ বিক্রেতারা যোগ দিয়েছেন এ কাজে।
আঁশ দিয়ে মাছ-মুরগির খাবার, নারীর গহনা, ওষুধের কাভার তৈরিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে তা কিনছেন ঢাকা-চট্টগ্রামের মহাজনরা। তাতে বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়েছে বলে জানান মাছ বাজারের শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের।
আর সম্ভাবনাময় এ খাতের পরিসর বাড়িয়ে আঁশ সংরক্ষণের উন্নত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অসক কুমার সাহার।
প্রতি মাসে মাছ ব্যবসায়ীদের প্রতিজন দুই থেকে প্রায় আড়াই মণ আঁশ সংগ্রহ করতে পারেন। পাইকাররা তা মানভেদে কেনেন প্রতিমণ ১৬শ’ থেকে ৪ হাজার টাকা দরে। এই আঁশ ঢাকা-চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে সুদূর চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে।
নদী বন্দর / এমকে