মেহেরপুরে ভৈরব নদ খননের উপকার পেতে শুরু করেছিল এলাকাবাসী। দেশীয় মাছসহ জীব বৈচিত্রে ভরে উঠেছিল নদটি। তবে নদ শাসনের ব্যবস্থা না করায় বর্ষায় পাড় ভেঙ্গে পানি প্রবাহের উৎস মুখটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে নদ তার নাব্য হারিয়ে আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।
২০১৭ সালে প্রায় ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করা হয় ভৈরব নদের ২৯ কিলোমিটার এলাকা। ফলে নদ ও এর আশপাশ এলাকায় গড়ে উঠে মনোরম পরিবেশ। এলাকার মানুষ মাছধরা, সেচসহ পাচ্ছিল বিভিন্ন সুবিধা। কিন্তু নদী শাসনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এখন ভরে গেছে কচুরিপানাসহ বিভিন্ন আগাছায়।
নদের ভারতীয় অংশে রয়েছে ক্রসবাঁধ এবং জলঙ্গি নদীতে একটি রেগুলেটর। এতে ভাটিতে বাংলাদেশে অংশে পানি প্রবাহ দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, মলমূত্র পতিত হওয়ার ফলে নদীর পানি দূষিত হয়েছে। এখন নদীর পানিতে নামলে প্রচুর চুলকায়। কচুরিপানা, আবর্জনা ইত্যাদি অনেক কিছু এখানে জমে অপরিস্কার হয়ে আছে।
নদটির উৎসমুখ খনন করাসহ এর শাসন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার দাবি এলাকাবাসীর।
নদপাড়ের মানুষজন জানান, নদী নাব্যতা হারাচ্ছে, দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে খননের উপকারিতা জনগণ পাচ্ছে না।
নদী রক্ষা কমিটির জেলা সদস্য ও মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক বলেন, পানির যে উৎসমুখটা, এখানের দুই কিলোমিটার খনন হয়নি। কেন হয়নি, এটা আমরা প্রশ্ন করলে তারা একেক সময় একেক জবাব দেয়।
পরিবেশবীদরা বলছেন, নদী শাসন না করার কারণে আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে ভৈরব।
গাংনী সরকারী ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক (অবঃ) এনামুল আযীম বলেন, নদীর মধ্যে কোন ফ্লো নেই, আবদ্ধের মধ্যে এটা একটা বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে এবং জীব বৈচিত্রের জন্য একটা হুমকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, নদটি রক্ষায় দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প পরিকল্পনাধীন।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোঃ মুনসুর আলম খান বলেন, ভৈরব নদের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প পরিকল্পনাধীন আছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে পরে আগামীতে দ্রুতই কার্যক্রম শুরু করতে পারবো বলে আমরা আশা করছি।
ভৈরব নদের মোট আয়তন প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। এর মধ্যে মেহেরপুর অংশে রয়েছে ৭৪ কিলোমিটার।
নদী বন্দর / জিকে