পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে বাঁকুড়া থেকে লড়ছেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা ব্যানার্জি। লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরার পরিচিত গণ্ডি থেকে বেরিয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন টলিউডের এই নায়িকা।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জমা দিতে হয়। জানাতে হয় সম্পত্তির পরিমাণ, গাড়ি, বাড়ি, পেশা, অতীতে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন কি-না ইত্যাদি। নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী এসব তথ্য দিয়েছেন সায়ন্তিকাও।
হলফনামা থেকে জানা গেছে, সায়ন্তিকা থাকেন কলকাতার সল্টলেকের লাবনী এস্টেটে। ২০০৮ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
তবে এই প্রার্থীর নাকি কোনো নিজস্ব বাড়ি নেই। আর্থিক সঙ্গতির দিক দিয়েও তিনি দুর্বল। পশ্চিমবঙ্গে অন্যান্য তারকা রাজনীতিবীদদের প্রায় সবাই কোটিপতি। কিন্তু সে তুলনায় সায়ন্তিকা অনেকটাই পিছিয়ে।
নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেয়া হলফনামা অনুযায়ী, তার ব্যাংকে জমা অর্থ এবং গাড়ির দাম মিলিয়েও কোটির গণ্ডি পেরোয়নি। উপরন্তু তার রয়েছে বড় অংকের ঋণ।
জানা গেছে, সায়ন্তিকার হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ মাত্র ৪৩ হাজার ১২৭ রুপি। বন্ধন, অ্যাক্সিস, এইচডিএফসি এবং আইসিআইসিআই মিলিয়ে মোট ৮টি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার। এর মধ্যে তিনটি আবার যৌথ অ্যাকাউন্ট।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অনেকগুলো হলেও সেখানে জমা টাকার পরিমাণ নামমাত্র। বন্ধন ব্যাংকের একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট ছাড়া আর কোনো অ্যাকাউন্টেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ নেই।
ওই যৌথ অ্যাকাউন্টে তার নামে রয়েছে ৩৪ হাজার ৭৯৬ রুপি। আইসিআইসিআইয়ের একটি অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১ হাজার ৩৮৯ রুপি। অন্য একটি অ্যাকাউন্টে রয়েছে ২৭৭ টাকা। একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১ টাকা। বাকি ৪টি অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স শূন্য!
৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে তাঁর মোট সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৬ হাজার ৪৬৩ রুপি। হলফনামার হিসেব অনুযায়ী তার হাতে নগদ রয়েছে ৪৩ হাজার ১২৭ রুপি।
তবে সঞ্চয়ে পিছিয়ে থাকলেও গাড়ি এবং গহনার প্রতি তার ভালোবাসা স্পষ্ট।
তাই ব্যাংকে টাকা না থাকলেও ২০১৮ সালে ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৬ রুপি দিয়ে একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি কেনেন সায়ন্তিকা।
এ ছাড়া ৩ দশমিক ৫২ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না রয়েছে তার। সঙ্গে রয়েছে বহুমূল্য আরও অলঙ্কার, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৩৬ রুপি।
এইচডিএফসি ব্যাংকে তার ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৮৯১ রুপির গাড়ি ঋণ রয়েছে। আইসিআইসি ব্যাংকের কাছে ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ১৮ রুপির ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে। এছাড়া এইচডিএফসি ক্রেডিট কার্ডে ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৯৩৩ রুপি এবং অ্যাক্সিস ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৭ রুপি পরিশোধ করতে হবে।
অর্থাৎ তার মোট ঋণ ৪০ লাখ ৮৭ হাজার ২৪০ টাকা। এর বাইরে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার জিএসটি এখনও জমা দেননি তিনি। ব্যাংক ব্যালেন্স, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তার সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ৪৬ লাখ ৩৯ হাজার ৫২ রুপি।
সায়ন্তিকার নিজের নামে কোনো বাড়ি, ফ্ল্যাট কিংবা জমি নেই। ২০২০-২১ অর্থবছরে তিনি মোট ১১ লাখ ১৫ হাজার ৬০ টাকা উপার্জন করেছেন বলে হলফনামায় জানিয়েছেন।
নদী বন্দর / এমকে