১৮৯ রান, টি-টোয়েন্টির হিসেবে লক্ষ্যটাকে বেশ বড়ই বলা যায়। কিন্তু এভাবে ধসে না পড়লে লড়াইটা তো অন্ততপক্ষে হতো। সেটাও হলো না। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে ৪৫ রানের বড় ব্যবধানে হারল রাজস্থান রয়্যালস।
রান তাড়ায় জস বাটলার ভালোই শুরু করেছিলেন। ৩৫ বলে ৪৯ রান করা এই ব্যাটসম্যান যখন ক্রিজে ছিলেন, ১১ ওভার শেষে রাজস্থান রয়্যালসের রান ছিল ২ উইকেটে ৮৭। জেতা কঠিন হলেও তখন পর্যন্ত লড়াইয়ে বেশ ভালোভাবেই ছিল মোস্তাফিজদের দল।
কিন্তু বাটলার আউট হওয়ার পরই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে রাজস্থানের ইনিংস। ২ উইকেটে ৮৭ থেকে এক ঝটকায় ৭ উইকেটে ৯৫ রানে পরিণত হয় দলটি। অর্থাৎ ৮ রান তুলতে হারায় ৫ উইকেট। সেখান থেকে আর ফেরা যায়?
না, ফেরা সম্ভবও হয়নি সঞ্জু স্যামসনের দলের। রাহুল তেয়াতিয়া (১৫ বলে ২০) আর জয়দেব উনাদকাত (১৭ বলে ২৪) ছোট দুটি ইনিংসে কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই যা একটু কমিয়েছেন। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে উনাদকাত আউট হওয়ার পর বাকি চার বল টিকে দলের অলআউট হওয়া ঠেকিয়েছেন মোস্তাফিজ। ৯ উইকেটে ১৪৩ রানে থেমেছে রাজস্থানের ইনিংস।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমেছিল চেন্নাই সুপার কিংস। দলের ব্যাটসম্যানরা কেউ হাফসেঞ্চুরি না পেলেও সবাই টুকটাক অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন। তাতেই ৯ উইকেটে ১৮৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ফেলে চেন্নাই।
বোলিংয়ে নেমে প্রথম তিন ওভারে উইকেটের দেখা পায়নি রাজস্থান। এমতাবস্থায় ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজকে আক্রমণে আনেন দলের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। বল হাতে নিয়েই অধিনায়কের মুখে হাসি ফোটান কাটার মাস্টার।
ওভারের প্রথম চার বলে দেন তিন রান। পঞ্চম বলেই উইকেট মোস্তাফিজের। বাঁহাতি পেসারের স্লোয়ার ডেলিভারি মিডঅনে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন রিতুরাজ গোয়াকঁদ। পরের বলটিও ডট নেন ফিজ।
পাওয়ার প্লে’র পর সপ্তম ওভারে এসে অবশ্য কিছুটা খরুচে ছিলেন মোস্তাফিজ। মঈন আলির এক ছক্কা আর চারে ১৩ রান দেন তিনি। এরপর ১৬তম ওভারে এসে আবারও নিয়ন্ত্রিত বোলিং। এবার তার ওভার থেকে আসে মাত্র ৬ রান। ৩ ওভারে ২২ রানে ফিজের ছিল ১ উইকেট।
দারুণ বোলিং করা টাইগার পেসারকে মজুদ রেখে দেন রাজস্থান দলপতি, শেষ ওভারের জন্য। শেষ ওভারে এসে মোস্তাফিজ দিয়েছেন ১৫ রান। কিন্তু খুব খারাপ বোলিং কি করেছেন? না। ওই ওভারের প্রথম পাঁচ বলে কোনো বাউন্ডারি হয়নি। বরং দুটি রানআউট হয়েছে।
একদম শেষ বলে ডোয়াইন ব্রাভো ছক্কা না হাঁকালে স্বস্তির হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারতেন মোস্তাফিজ। সেটা না হওয়ায় তার বোলিং ফিগারটি দাঁড়ায় : ৪-০-৩৭-১। এছাড়া চেতন সাকারিয়া ৩টি আর ক্রিস মরিস নেন ২টি উইকেট।
চেন্নাইয়ের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেউই চল্লিশও করতে পারেননি। ওপেনিংয়ে নেমে ফ্যাফ ডু প্লেসিস ১৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে ফেরার পর আম্বাতি রাইডু ১৭ বলে ২৭ করে আউট হলে এক পর্যায়ে ১২৫ রানে ৫ উইকেট ছিল তাদের।
শেষদিকে স্যাম কুরানের ৬ বলে ১৩ আর ডোয়াইন ব্রাভোর ৮ বলে ২০ রানের দুটি ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংসেই বড় পুঁজি পেয়ে যায় চেন্নাই। যদিও অধিনায়ক ধোনি আরও একবার ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন, ১৭ বলে ক্যাপ্টেন কুল করেন ১৮ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চেন্নাই সুপার কিংস : ২০ ওভারে ১৮৮/৯ (রুতুরাজ গাইকঁদ ১০, ফ্যাফ ডু প্লেসিস ৩৩, মঈন আলি ২৬, সুরেশ রায়না ১৮, আম্বাতি রাইডু ২৭, এমএস ধোনি ১৮, ডোয়াইন ব্রাভো ২০; চেতন সাকারিয়া ৩/৩৬, ক্রিস মরিস ২/৩৩, মোস্তাফিজুর রহমান ১/৩৭)
রাজস্থান রয়্যালস : ২০ ওভারে ১৪৯/৯ (জস বাটলার ৪৯, মানান ভোহরা ১৪, সঞ্জু স্যামসন ১, শিভাম দুবে ১৭, ডেভিড মিলার ২, রিয়ান পরাগ ৩, রাহুল তেয়াতিয়া ২০, ক্রিস মরিস ০, জয়দেব উনাদকাত ২৪; স্যাম কুরান ২/২৪, রবীন্দ্র জাদেজা ২/২৮, মঈন আলি ৩/৭)।
ফল : চেন্নাই সুপার কিংস ৪৫ রানে জয়ী।
নদী বন্দর / পিকে