বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রায়। তার রূপ এবং গুণ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বিশ্বসুন্দরীর খেতাব জিতে বলিউডে নাম লেখান৷ জয় করে নেন কোটি দর্শকের মন।
হিন্দি সিনেমা ছাড়াও ঐশ্বরিয়া আলো ছড়িয়েছেন বাংলা, তামিল ও ইংরেজি সিনেমাতেও। ক্যারিয়ারে ‘তাল’, ‘মুহব্বাতিন’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘দেবদাস’সহ বহু সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন৷
শুরু থেকেই বেছে বেছে কাজ করার একটি প্রবণতা ছিল এই বিশ্বসুন্দরীর মধ্যে৷ যার কারণে অনেক সুপারহিট সিনেমা তিনি ছেড়ে দিয়েছেন৷
এসব সিনেমা ছেড়ে দেয়ার পেছনে ছিল বেশ কিছু শক্ত কারণ। জেনে নেয়া যাক ঐশ্বরিয়া রাইয়ের ফিরিয়ে দেওয়া কিছু সিনেমার গল্প।
রাজা হিন্দুস্তানি এবং দিল তো পাগল হ্যায়
এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বরিয়া জানিয়েছিলেন, আমির খানের বিপরীতে ‘রাজা হিন্দুস্তানি’ সিনেমায় ডাক পান তিনি৷ এই সিনেমায় পরিচালকের পছন্দের তালিকায় প্রথমে ছিল ঐশ্বরিয়ার নাম। যখন সিনেমাটি নিয়ে আলাপ চলছে সেসময় ডাক আসে বলিউডের সবচেয়ে হিট পরিচালক যশ চোপড়ার কাছ থেকে৷ তিনি ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ সিনেমায় ঐশ্বরিয়াকে চেয়েছিলেন৷ দোটানায় পড়ে যান নায়িকা৷ শাহরুখ না আমির খান, যশ না ধর্মেশ এই ভাবনা ভাবতে ভাবতে এক পর্যায়ে দুটি সিনেমা থেকেই সরে যান ঐশ্বরিয়া।
কুচ কুচ হোতা হ্যায়
বলিউডের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে কুচ কুচ হোতা হ্যায় সিনেমা৷ এটি নির্মাণের সময় করণ জোহরকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। অনেক নায়িকাই পরিচালককে সেসময় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সেই তালিকায় ছিল মিসেস বচ্চনের নামও। ১৯৯৯ সালের এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বরিয়া জানান, সে সময় সিনেমাতে নতুন আসলেও প্রায়ই অনেক সিনিয়র অভিনেত্রীদের সঙ্গে তুলনা করা হতো এ বিশ্বসুন্দরীকে। আর তাই শাহরুখের বিপরীতে সে সময়ে অভিনয় করার সুযোগ থাকলেও কিছুটা সমালোচনা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য রাজি হননি তিনি৷ পরে সেই চরিত্রে রানী মুখার্জিকে নেয়া হয়৷
বলার অপেক্ষা রাখে না, কুচ কুচ হোতা হ্যায় ছবির সাফল্য বা রানী অভিনীত চরিত্রের জনপ্রিয়তা দুইই যে কোনো নায়িকার জন্য আফসোস ও ঈর্ষার কারণ আজও।
চালতে চালতে
এই সিনেমাতে ঐশ্বরিয়া রাইকেই বাছাই করেছিলেন শাহরুখ খান। মূলত ভক্তদের চাহিদার জন্যই ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন বলিউড বাদশাহ৷ ঐশ্বরিয়াও বেশ আনন্দিত ছিলেন সিনেমাটি নিয়ে৷ শুরু হয়েছিলো শুটিং। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাদ দিয়েছিলেন শাহরুখই৷ গুঞ্জন রয়েছে, সে সময় সালমান খানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ঐশ্বরিয়া রাইয়ের। সম্পর্কে তখন টানাপোড়েন চলছে৷ প্রায়ই শুটিং সেটে হানা দিয়ে ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে ঝগড়া করে সময় ও কাজের পরিবেশ নষ্ট করতেন সালমান। এ ঝামেলা এড়াতে পরিচালক আজিজ মির্জাকে ঐশ্বরিয়াকে বাদ দেয়ার পরামর্শ দেন শাহরুখ৷ আবারও ঐশ্বরিয়ার বদলে শাহরুখের নায়িকা হলেন রানী মুখার্জি। প্রেম ও দাম্পত্য জীবনের টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত এই সিনেমাটিও গল্প, সংলাপ, চমৎকার অভিনয় ও গানের গুণে সুপারহিট হয়।
মুন্নাভাই এমবিবিএস
২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া রাজকুমার হিরানির এই সিনেমায় প্রথমে ডাক পেয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই। সঞ্জয় দত্তের বিপরীতে সিনেমাটির কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ঐশ্বরিয়া কেন নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন সে বিষয়ে আজ পর্যন্ত পরিস্কার করে কিছু জানা যায়নি। ছবিতে সঞ্জয়ের নায়িকা হন পরে বিদ্যা বালান৷ তুমুল হিট করে ছবিটি বক্স অফিসে৷ বিদ্যাও হয়ে উঠেন ব্যবসা সফল একজন নায়িকা।
দোস্তানা
বলিউডের ব্যবসা সফল এই সিনেমাতেও শুরুতে নায়িকা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া৷ পরে তিনি সরে যান। এ ছবি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে এক সাক্ষাৎকারে বচ্চন বাড়ির বউ বলেন, ‘সিনেমাটিতে সুযোগ পেয়েও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম কারণ আমি দর্শককে হতাশ করতে চাইনি। আমার মনে হয় আমি যদি সিনেমাটিতে অভিষেকের সাথে প্রেম করে সিনেমার শেষ ভাগে জন আব্রাহামের সঙ্গে পালিয়ে যেতাম তাহলে এটা দর্শকের জন্য মন ভাঙ্গনের কারণ হতো। আর আমি মনে করি এই চার্মিং ক্যারেক্টারে প্রিয়াঙ্কা ছিল সবথেকে উপযোগী। এসব ভেবে সিনেমাটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি।’
নদী বন্দর / পিকে