আজ ৩০ সেপ্টেম্বর। এই সময়ের বাংলা চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় মহাতারকা প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির জন্মদিন। আশির দশকে পরিচালক বিমল রায়ের দুটি পাতা সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে তার অভিনয় জীবনের পথচলা শুরু।
তারপর প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি বাংলা সিনেমা জগতে রাজত্ব করে চলেছেন। তাকে কখনও বলা হয়েছে ইন্ডাস্ট্রি, আবার কখনও তার তুলনা করা হয়েছে মহানায়কের সাথে। তার জনপ্রিয়তা সময়ের সাথে সাথে সীমাহীনভাবে বেড়েই চলছে। বাংলা মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির মহাতারকা থেকে সমান্তরাল-শৈল্পিক চলচ্চিত্রের অভিনেতা- সব ভূমিকায়ই তিনি জয়ী হয়েছেন নিঃশর্তে।
১৯৬২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন প্রসেনজিৎ। শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন বাবা বিশ্বজিৎ পরিচালিত ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ছোট্ট ‘জিজ্ঞাসা’তে। নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় ১৯৮৩ সালে ‘দুটি পাতা’ ছবিতে। একজন রোমান্টিক নায়ক হিসেবে প্রথম ছবিতেই সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। এরপর একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের।
অমর সঙ্গী, প্রতিশোধ, শত্রু, জীবন মরণ, আতঙ্ক, দোলন চাঁপা, কালপুরুষ, উনিশে এপ্রিল, অটোগ্রাফ, লাঠি, চোখের বালি, অটোগ্রাফ, মনের মানুষ, জাতিস্মরসহ প্রায় আড়াই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেও দেখা গিয়েছে তাকে।
সুদীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি কুড়িয়েছেন ভূয়সী প্রশংসা, ভক্তদের মন উজাড় করা ভালোবাসা আর সম্মাননাস্বরূপ অসংখ্য পুরস্কার। তন্মধ্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, স্টার ডাস্ট পুরস্কার, মহানায়ক সম্মাননা, মিরচি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, আনন্দলোক পুরস্কার, জি গৌরব অ্যাওয়ার্ড, বিগ বাংলা মুভি অ্যাওয়ার্ড, স্টার জলসা ইন্টারটেইনমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, কালাকর অ্যাওয়ার্ড, বিএফজেএ পুরস্কার, সঙ্গীত সিনে অ্যাওয়ার্ড উল্লেখযোগ্য।
প্রসেনজিৎ বিখ্যাত বাংলা এবং হিন্দি ছবির নায়ক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের একমাত্র পুত্র। তার বোন পল্লবী চট্টোপাধ্যায়ও একজন অভিনেত্রী। মা রতনা চট্টোপাধ্যায় ছিলেন গৃহিণী।
প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী ১৯৯২ সালে বিয়ে করেন বিখ্যাত অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়কে। তিন বছর সংসার করার পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর জীবনসাথী করেন ১৯৯৭ সালে অপর্ণা গুহঠাকুরতাকে। কিন্তু অজানা কারণে সে বিয়েও বেশিদিন টেকেনি। ২০০২ সালে অভিনেত্রী অর্পিতা পালকে বিয়ে করে তিনি শুরু করেন জীবনের আরেক নতুন ইনিংস। বর্তমানে প্রসেনজিৎ-অর্পিতা দম্পতির ত্রিশেনজিৎ নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।
অভিনয় দক্ষতার বদৌলতে কোটি দর্শকের অন্তরে তিনি বেঁচে রইবেন। শুভ হোক তার আগামীর পথচলা। জয় প্রসেনজিৎ, জয় বাংলা সিনেমা।
নদী বন্দর / এমকে