অভিনয় সমৃদ্ধ পরিবারেই তার জন্ম। বাবা অভিনেতা জেমিনি গণেশন আর মা অভিনেত্রী পুষ্পাভাল্লি। এ দম্পতির আদরের সন্তান হিসেবে বেড়ে উঠেছেন। তাদের হাত ধরেই নাম লেখান অভিনয়ে, শিশুশিল্পী হিসেবে। সময়ের স্রোতে তিনি একটা সময় হয়ে উঠলেন হিন্দি সিনেমার বলিউডের রানী।
নায়িকা হিসেবে তার ব্যক্তিত্ব, সৌন্দর্য, হাসি, চাহনি, অভিনয় বশ করে নিয়েছিলো কোটি যুবকের হৃদয়। বলছি তিলোত্তমা-চিরসবুজ অভিনেত্রী রেখার কথা। আজ তার জন্মদিন। ১৯৫৪ সালের ১০ অক্টোবর চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করা এই অভিনেত্রী আজ শুরু করলেন জীবনের ৬৭ বছর। বিশেষ এই দিনে ভক্ত-অনুরাগী ও সহকর্মীদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন রেখা।
রেখার নাম শুনলে আজও হিন্দি সিনেমাপ্রেমীদের অন্তরে প্রেম খেলে যায়। সময়ের চেয়ে অনেক বেশিই আপডেট ছিলেন তিনি। একজন স্মার্ট, স্টাইলিশ, আকর্ষণীয় অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন রেখা, নায়িকাবহুল বলিউডের তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যেও।
শিশুশিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু তার ষাটের দশকে। নায়িকা হিসেবে প্রথম দর্শকের সামনে আসেন ১৯৭০ সালে ‘শাওন ভাদো’ ছবি দিয়ে। পঞ্চাশ বছরের ক্যারিয়ারে রেখা প্রায় ২ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
মধুবালা, নার্গিস, বৈজয়ন্তীমালাদের পরের প্রজন্মের নায়িকা হিসেবে রেখা ছিলেন অনবদ্য একজন। প্রেমিকা চরিত্রে তার অভিনয় পাগল করে রাখতো তরুণ দর্শকদের। বিশেষ করে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তার জুটি ছিলো তুমুল জনপ্রিয়। সাফল্য, রহস্য, প্রেমের গল্পে এ জুটির নাম ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
১৯৭৬ সালে ‘দো আনজানে’ ছবিতে তারা প্রথমবারের মতো জুটি বাঁধেন। তারপর থেকেই সম্পর্কের উত্থান। সহকর্মী হিসেবে কাছাকাছি এসে তারা বাঁধা পড়েন হৃদয়ের দাবির কাছে। তবে সেই প্রেম বলিউডে প্রচুর ডালপালা মেলে দিলেও কোনো পরিণতি পায়নি। ১৯৮১ সালে ‘সিলসিলা’ মুক্তির পর ভেঙে যায় অমিতাভ-রেখা জুটি। আর কখনই একসঙ্গে অভিনয় করেননি তারা।
বলা হয়ে থাকে বিখ্যাত ‘সিলসিলা’ সিনেমাটির গল্পে অমিতাভ, রেখা আর জয়ার জীবনেরই গল্প। যেখানে তাদের ত্রিভুজ প্রেম ফুটে উঠেছে ভালোবাসা আর বিরহের সংলাপ-গানে।
রেখার ক্যারিয়ারে আরও একটি মাইলফলক সিনেমা ‘উমরাও জান’। ১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া এ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
এছাড়াও ২০১০ সালে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা লাভ করেন। তিনবার জিতেছেন ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।
রেখা অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে আছে ‘দো আনজানে’, ‘ঘর’, ‘মুকাদ্দার কা সিকান্দার’, ‘খুবসুরাত’, ‘সিলসিলা’, ‘বসিরা’, ‘উৎসব’, ‘খুন ভারি মাং’, ‘ইজাজাত’, ‘উমরাওজান’, ‘কামাসূত্র’, ‘জুবায়দা’ ইত্যাদি।
নদী বন্দর / সিএফ