1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
উত্তরে শীতের হাতছানি - Nadibandar.com
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৫৯ বার পঠিত

গত কয়েক দিনে হিম হয়ে উঠেছে কার্তিকের সকাল। উত্তপ্ত রক্তিম সূর্যটাও ইদানিং নিস্তেজ। গাছ-পালা, ফুল-ফল, সবুজ ঘাস ও ফসলের মাঠও যেন শিশিরাসিক্ত। আবার কাক ডাকা ভোর ও সন্ধ্যা নামার পরপরই প্রকৃতিকে যেনো গ্রাস করছে কুয়াশার চাদর। মোটকথা উত্তরে হেমন্তের হাত ধরে আসছে শীত।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. গাউসুজ্জামান বলেন, গত সপ্তাহ দুয়েক থেকে আবহাওয়ার ধারাবাহিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উত্তর জনপদে গড় তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। আজ সকাল থেকে রাজশাহীতে ঘনকুয়াশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাধারণত তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রির নিচে নামলেই শীত পড়তে শুরু করে। তবে আজ সকাল ৭টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি বলেন, এক সপ্তাহের বেশি সময় থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।

 

আবহাওয়া পর্যবেক্ষকের ভাষ্য, দেশে ডিসেম্বরের দিকে শুরু হয় শীতের তীব্রতা। সাধারণত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জনজীবনে জাপ্টে ধরে শীত। মূলত এ সময়টায় সর্বোচ্চ শীত পড়বে। এরপর থেকে আবার শীত কমতে শুরু করবে। তাই হেমন্তের সমাপ্তির পরপরই মধ্য ডিসেম্বরে রাজশাহীসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসবে শীত।

নভেম্বরে বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর ঘূর্ণিঝড়ের রেশ না কাটতেই ডিসেম্বরে শৈত্যপ্রবাহেরও সম্ভাবনা রয়েছে। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নদী তীরবর্তী এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া রাত ও দিনের তাপমাত্রা পর্যায়ক্রমে কমতে থাকবে।

 

এবার রাজশাহীজুড়ে ঠিক সময়েই এসেছে শীত। হেমন্তের শেষ সময়ে হিম বাতাসে পরিবর্তন এসেছে প্রকৃতিতে। খুব সকাল ও সন্ধ্যা হলেই গরম কাপড় ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না কেউ।

শীতের আগমণে গাছিরাও খেজুরের রস আহরণে কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়। খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়। আর সেই গুড় দিয়ে গ্রামগঞ্জে বানানো হচ্ছে হরেক রকমের শীতের পিঠা। যদিও শহুরে জীবনে এর ব্যতয় ঘটেনি। রাজশাহীর বিভিন্ন মোড়ে ভ্যান ও দু’চাকার গাড়িতে ভাপা পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে।

 

শীতে ভাপা পিঠার পাশাপাশি বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষের প্রিয় খাবার কালাই রুটি। শীত আসলেই নগরীর কেন্দ্রীয় বাস ও রেলস্টেশন এলাকাসহ সাহেব বাজার, কোর্ট হড়গ্রাম, তালাইমারী, ভদ্রা, উপশহর ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পড়ে যায় কালাইরুটি খাওয়ার ধুম। কালাইরুটির সঙ্গে বেগুন ভর্তা, হাঁস বা গরুর মাংস অথবা গরুর বটভুনা সঙ্গে ধনিয়া পাতার ঝাল চাটনির চাহিদা বেড়ে যায়।

শীতের আগমনে জনজীবন ধীরে ধীরে স্থবির হতে থাকলেও চাঞ্চল্য আসে ধনুকরদের। এসময় ব্যস্ততার মাঝেই কাটে তাদের দিন। তবে অন্যান্য স্বাভাবিক বছরের চাইতে এ বছর ব্যস্ততা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। করোনায় প্রায় দুবছরের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ও শীতের আগমনের কাছাকাছি সময়ে এসে মেস-ছাত্রাবাস খুলে দেওয়ায় ধনুকরদের ব্যস্ততা বেড়েছে। লেপ, তোষক, জাজিম ও বালিস তৈরিতে রীতিমতো ব্যস্ত রাজশাহীর ধনুকররা।

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, মূলত শীতের আগমন নির্ভর করে জলবায়ুর ওপর। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাতের ধারাও পরিবর্তন হয়। দক্ষিণের বায়ুর হেরফের হলে মৌসুমেরও হেরফের হয়ে থাকে। আবার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমবেশি হলে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রারও পরিবর্তন হয়। এতে বায়ুপ্রবাহের দিক ও সমুদ্র স্রোতের কিছুটা পরিবর্তন হয়। আমাদের দেশে যে শৈত্যপ্রবাহ আসে এটি মূলত উত্তর বা উত্তরপশ্চিম দিকের বায়ু। এসময় সমুদ্রপৃষ্টের তাপমাত্রা কমে যায়। আর এ কারণে সেখানে উষ্ম বায়ুর পরিমাণ কমে গেছে। ফলে দ্রুত শীত পড়েছে উত্তর জনপদে।

রাবির এই পরিবেশবিদ বলছেন, বিশ্বব্যাপী প্রায় দুবছর করোনার কারণে লকডাউনের প্রভাবে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এতে বৈশ্বিক আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আর তাই এবার সঠিক সময়ে শীত পড়েছে। সাধারণত হেমন্তের শেষ অর্থাৎ নভেম্বরের মধ্য বা শেষভাবে শীতের আগমনী বার্তা মেলে। এবার ঠিক সেটিই হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

নদী বন্দর / বিএফ

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com