কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার গোমতি নদীর চর এলাকায় এবার হলুদের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি কেজি হলুদ ৩০ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ কারণে তারা বেশ খুশি। হলুদ চাষে মুনাফা বেশি হওয়ায় বর্তমানে অনেক কৃষক মাসলা জাতীয় এ পণ্যটি উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠতে শুরু করেছেন।
গোমতি নদীর চর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জমিতে হলুদ পরিপক্ক হয়ে গাছের পাতা শুকিয়ে গেছে। জমি থেকে সেই হলুদ সংগ্রহ করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন কৃষকরা। এরপরই বাজারজাত শুরু হবে এই হলুদ।
কুমিল্লা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর কুমিল্লায় ১৪০ হেক্টর জমতি হলুদ চাষ হয়েছে। আদা চাষ হয়েছে ১৯৩ হেক্টর জমিতে।
জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কটকবাজার সীমান্তে গোমতির চরে হলুদ চাষ করেছেন ইউনুস মিয়া। গত ১৫ বছর ধরে অল্প কিছু জমিতে হলুদ চাষ করেন তিনি। পবিবারের সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে নিজ জমিতে কাজ করছিলেন তিনি।
চাষি ইউনুস মিয়া বলেন, ‘কাঁচা হলুদ স্বাস্থ্যর জন্য উপকারী। কাঁচা হলুদ খুচরা প্রতিকেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করি। শুকানোর পর মেশিনে ভাঙিয়ে এর গুড়া আড়াইশ টাকা কেজি বিক্রি করি। এ বছর ৩৬ শতক জমিতে হলুদ চাষে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছি সব ব্যয় বাদে অন্তত ৪৫ হাজার টাকা মুনাফা হবে।’
ইউনুস মিয়ার ছেলেন ওয়াসিম বলেন, ‘বাবা এ বছর ৩৬ শতক জমিতে হলুদ চাষ করেছেন। আগে আমাদের এই জমিটি অনাবাদি ছিল। বড় বড় ঘাস ছিলো। ঝোপঝাড়ও ছিলো। জমি পরিষ্কার করে হলুদ চাষ শুরু করেন বাবা। ফলনও ভালো পাচ্ছেন তিনি। আগামীতে আরো ৫০ শতক জমিতে হলুদ চাষ করার ইচ্ছা আছে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নানকরা এলাকার বাসিন্দা এমরান হোসেন বলেন, ‘পরিত্যক্ত ৩৫ শতক জমিতে হলুদ চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। শুকানোর পরে অন্তত ৩৫ কেজি গুড়া হলুদ পাবো। আড়াইশ টাকা করে কেজি বিক্রি করবো। খরচ উঠে যাবে। আর যা থাকবে তা দিয়ে সারা বছরের ঘরের চাহিদা মিটবে।’
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘পরিত্যক্ত জমিতে আদা ও হলুদ চাষ করা যায়। এই দুইটা ফসল খুব মূল্যবান। তবে যেসব জমি পরিত্যক্ত থাকে, ঘন ঝোপ জঙ্গল আছে সেসব জমিতে হলুদ চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জেলার আগ্রহী কৃষকদের হলুদ চাষে সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
নদী বন্দর/এসএইচ