দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া গ্রামের খালের ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজটি বৃষ্টির পানির স্রোতে মাটি ধসে ভেঙে পড়েছে। গত সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সেতুটি ভেঙে পড়ায় উপজেলার দৌলতপুর ও খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের সংযোগ সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দুটি ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
জানা যায়, উপজেলার খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের দুই হাজার ১০০ বিঘা ফসলি জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০২০ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টনের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ দিনের জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি নিষ্কাশনের জন্য দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া এলাকায় ৯০০ ফুট খালসহ সড়কের ওপর একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে প্রবাহিত পানি ওই খাল হয়ে বেইলি ব্রিজ দিয়ে ছোট যমুনা নদীতে প্রবাহিত হওয়ার সময় তীব্র স্রোতের কবলে গত সোমবার দুপুরে বেইলি ব্রিজের দক্ষিণ পাশের মাটি ধসে গিয়ে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। এতে করে দৌলতপুর ও খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের সংযোগ সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।
ফলে দুটি ইউনিয়নের বারাইপাড়া, মহদিপুর, জয়নগর, গড়পিংলাই, ঘোনাপাড়া, লক্ষ্মীপুর, খয়েরবাড়ী, বেতদিঘি,দৌলতপুরসহ ১০ টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এসব গ্রামের মানুষদের প্রয়োজনে দুটি ইউনিয়ন পরিষদ ও হাট-বাজারে যেতে হলে ওই রাস্তা ব্যবহার করে চার থেকে ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হতো। সেখানে ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় বিকল্প পথে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
আতাপাড়া গ্রামের সুমন ইসলাম বলেন, ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় এই এলাকার মানুষকে বিভিন্ন প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদ ও হাট বাজারে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাই ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের দাবি আমাদের।
খয়েরবাড়ী গ্রামের রেজাউল আলম বলেন, ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষিপণ্য আনা নেওয়ার জন্য।
খয়েরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক জানান, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন দশ গ্রামের প্রায় দুই হাজার করে মানুষ চলাচল করে, চরম সমস্যা হচ্ছে। এটি দ্রুত সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ব্রিজটি পরিদর্শন করা হয়েছে। এ বিষয়ে ওই স্থানে একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা জেলায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এলেই টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করা হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উপজেলা প্রকৌশলীকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। পরিষদের বরাদ্দ থাকলে আমিই ব্রিজটি করে দিতাম। কিন্তু বিষয়টি ব্যাপক ব্যয় সাপেক্ষ হওয়ায় সম্ভব হয়নি। তবে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
নদী বন্দর/এসএইচবি