ভুল তদন্তের মাধ্যমে জালিয়াতি মামলায় মোহাম্মাদ কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল ও সাজার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এমন ঘটনাকে দুদক ‘সরল বিশ্বাসে’ ভুল বলে দায় স্বীকার করেছে। পূর্বে জাহালমের ঘটনায়ও তদন্তের ভুলের দায় স্বীকার করে দুদক। তবে দুদকের এমন বারবার ‘সরল বিশ্বাসে’ ভুলের কারণে দুর্নীতি দমন সংস্থা হিসেবে দুদকের ওপর থেকে সাধারণ মানুষ আস্থা ও বিশ্বাস হারাবে বলে মনে করছে টিআইবি। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি ও প্রতিষ্ঠানটির পেশাদারিত্ব নিশ্চিতের আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে আবারো নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল ও সাজার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির (দুদক) পেশাদারিত্বে ঘাটতি রয়েছে। এ ঘটনায় দুদকের ‘সরল বিশ্বাসের’ ব্যাখ্যাকে দায় এড়ানোর অর্থহীন প্রয়াস আখ্যা দিয়ে টিআইবি সংশ্লিষ্টদের কঠোর জবাবদিহি নিশ্চিতের মাধ্যমে দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করার আহ্বান জানিয়েছে।
টিআইবি মতে, আগে জাহালমের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে একদিকে যেমন এ জাতীয় অগ্রহণযোগ্য ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হতো, অন্যদিকে প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের দক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাও পুনরায় প্রশ্নবিদ্ধ হতো না।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, ‘ভুল তদন্তের মাধ্যমে জালিয়াতি মামলায় মোহাম্মাদ কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল ও সাজার ঘটনায় দুদকের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে ভুল স্বীকার এবং মামলার এজাহার থেকে তদন্তে সব পর্যায়ে ভুল হয়েছে’ মর্মে দুদকের আইনজীবীর স্বীকারোক্তিই প্রমাণ করে যে, প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের পেশাদারিত্ব কতটা দুর্বল ও অদক্ষতায় ভরা।’
তিনি বলছেন, জাহালমের ঘটনা থেকে দুদক শিক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। একটি ঘটনার তদন্ত কাজ ১০ বছর ধরে চলেছে এবং বারবার তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও একজন নির্দোষ মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের ঘটনা ‘সরল বিশ্বাসে’ ঘটেছে বলে আদালতে দুদকের বয়ান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বরং পেশাদারিত্ব ও জবাবদিহির চূড়ান্ত ঘাটতির ফলে জাহালমের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, জাহালমের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল তা আমরা জানতে পারিনি। দুদকের মতো একটি ‘দুর্নীতি দমন’ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ জাতীয় ‘সরল বিশ্বাসের’ ভুল বারবার সংঘটিত হলে সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা বিনষ্ট হয়। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের দক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে, যা কাম্য হতে পারে না।’
নদী বন্দর / পিকে