1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
ট্রাম্পের চড়া শুল্ক কার্যকরে দিশেহারা বিশ্ব - Nadibandar.com
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ন
নদী বন্দর ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৮ বার পঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য করতে হলে এখন ‘শুল্ক রাজা’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের দয়ায় ভরসা করতে হচ্ছে বিশ্বকে। কারণ ট্রাম্প নিজেকেই দেশটির একমাত্র বাণিজ্য-রক্ষক বানিয়েছেন। তার ঘোষণা অনুযায়ী ২ এপ্রিল থেকে ব্যাপক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে ৯ এপ্রিল থেকে। তার আগেই হোয়াইট হাউজের দরজায় কড়া নেড়েছে অন্তত ৭০টি দেশ।

কিন্তু দরজার ওপারে কেউ যে আছেন, তা নিশ্চিত নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফকোভিচ যেমন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দুই উপদেষ্টা জেমিসন গ্রিয়ার ও হাওয়ার্ড লুটনিকের সঙ্গে। কিন্তু কোনো ফল মেলেনি। কারণ, তাদের হাতে চুক্তি করার ক্ষমতা নেই। এক ইইউ কর্মকর্তা বলেন, আমরা আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু ওনারা (গ্রিয়ার ও লুটনিক) এখনো ম্যান্ডেট পাননি। সবকিছু প্রেসিডেন্টের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।

লক্ষ্য একই, কৌশল ভিন্ন

শুল্কমুক্তির আশায় দেশগুলো উপহার থেকে শুরু করে হুমকির মতো নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। কেউ কেউ সরাসরি ট্রাম্পের কথাকে গুরুত্ব দিয়ে পাল্টা প্রস্তাব দিচ্ছে। যেমন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন পারস্পরিক বাণিজ্যে একেবারে শূন্য শুল্কের প্রস্তাব দিয়েছেন। তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামও দিয়েছে অনুরূপ প্রস্তাব—শুল্ক বিলুপ্তি, প্রতিশোধ না নেওয়ার অঙ্গীকার এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি।

কিন্তু হোয়াইট হাউজ এসব প্রস্তাবে সন্তুষ্ট নয়। ট্রাম্প বলেছেন, ইইউ মূলত গঠিতই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ক্ষতি করার জন্য। ভিয়েতনামের প্রস্তাব নিয়ে তার উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেছেন, দেশটি চীনা পণ্য ফেরি করে, রপ্তানিতে ভর্তুকি দেয়, এমনকি ‘চীনের উপনিবেশ’ হিসেবে কাজ করছে।

এক ফোনকল বদলে দিতে পারে সব?

হয়তো পারে। যেমন- জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু ট্রাম্পকে ফোন করতেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটে। জাপান চলে আসে অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে। তারা এখন একটি প্যাকেজ তৈরি করছে, যাতে বাণিজ্য ছাড়াও থাকবে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ ও সামরিক ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি।

আলোচনায় রয়েছে মার্কিন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস কেনা, আলাস্কার পাইপলাইনে বিনিয়োগ, মার্কিন অস্ত্র কেনা এবং মার্কিন কৃষিপণ্য ও গাড়ির ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করার মতো বিষয়গুলো। এর অনেক কিছু এরই মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত।

 

একই পথে হাঁটছে দক্ষিণ কোরিয়াও। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু’র সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প দাবি করেন, সেখান থেকেও মিলেছে বড় ধরনের ছাড়।

লাভ-ক্ষতির হিসাব

বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব ‘প্রতীকী জয়’ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে খুব একটা বদলাবে না। কারণ বাণিজ্য ঘাটতির মূল কারণ শুল্ক নয়, বরং সঞ্চয় ও বিনিয়োগের ভারসাম্যহীনতা। যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা চাহিদা বেশি থাকলে ঘাটতি থাকবেই।

এদিকে কিছু দেশ ট্রাম্পকে খুশি করার পরিবর্তে পাল্টা আঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ব্রাজিল কংগ্রেসে ‘পাল্টা শুল্ক বিল’ পাস করেছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ছাড় ও মেধাস্বত্ব সুরক্ষা বাতিলের সুযোগ রাখা হয়েছে।

চীন হুঁশিয়ারি দিয়েছে ‘শেষ পর্যন্ত লড়বে’ এবং ১০ এপ্রিল থেকে ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এরই মধ্যে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে—টার্গেট করা হয়েছে কসমেটিকস, কমলার রস, সয়াবিন ও যানবাহনকে।

বিকল্প পথের খোঁজ

ট্রাম্পের অনিশ্চিত নীতিতে হতাশ হয়ে ইউরোপ নতুন দিশা খুঁজছে। ভন ডার লিয়েন গত ৭ এপ্রিল বলেছেন, আমরা এখন সেই ৮৩ শতাংশ বৈশ্বিক বাণিজ্যের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি, যা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে। তবে আলোচনার দরজা এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।

শেষমেশ প্রশ্ন উঠছে—এই বিশৃঙ্খলায় আসলে কার লাভ? হয়তো ট্রাম্প নিজেই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ক্ষতি ডেকে আনছেন।

নদীবন্দর/এবি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com