কাশ্মীরে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার জেরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমস্ত পাকিস্তানি পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করলো ভারত। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সরাসরি হোক বা ঘুরপথে, পাকিস্তানি পণ্য কোনোভাবেই ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানে তৈরি কোনো পণ্য সরাসরি বা ঘুরপথে আমদানি অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তা এবং সরকারি নীতির স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশিকা জারি না-হওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এই নির্দেশিকার কোনো ব্যতিক্রমের জন্য অবশ্যই ভারত সরকারের আগাম অনুমতি নিতে হবে।’ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একাংশের মতে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি খুব বেশি পণ্য ভারতে আসে না। তবে ঘুরপথে দুবাই হয়ে কিছু পণ্য ভারতে আসত। বিশেষত, পোশাক, মশলা বা ছোট যন্ত্রাংশের মতো কিছু পণ্য ঘুরপথে ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করত। বাণিজ্যমহলের কারও কারও মতে, ঘুরপথেও যাতে কোনো পাকিস্তানি পণ্য ভারতে প্রবেশ না করে, তা নিশ্চিত করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে নরেন্দ্র মোদির সরকার।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর চালানো হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং সতর্ক করে জানায়, ভারত যদি সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তবে তারাও পাল্টা জবাব দেবে।
হামলার পর থেকে ভারত একের পর এক কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা, ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল, কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং আকাশসীমা বন্ধ করা।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে, আকাশসীমা বন্ধ করেছে এবং ভারতীয় কূটনীতিকদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সিন্ধু চুক্তির আওতায় তাদের বরাদ্দ পানি বন্ধ করলে সেটিকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে দেখা হবে।
নদীবন্দর/এএস