দেশের অর্থনীতিতে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপিতে) সড়ক ও নৌপরিবহন খাতের অবদান ৮.০ শতাংশ বা এক লাখ ৮৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পৃথকভাবে দেখলে সড়ক পরিবহন খাতের অবদান এক লাখ ৭৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। নৌপরিবহনের অবদান ১৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মিলনায়তনে বেসরকারি বাণিজ্যিক যান্ত্রিক এবং অযান্ত্রিক সড়ক ও নৌযান জরিপ ২০১৯ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়। মর্ডানাইজেশন অব ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস স্ট্যাটিসটিকস প্রকল্পের আওতায় জরিপটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। অনুষ্ঠানে জরিপটি উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক তোফায়েল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম।
জরিপে বলা হয়েছে, যানবাহনের মোট সংখ্যা ২৬ লাখ ৫৯ হাজার ২৫৭টি। এর মধ্যে যাত্রীবাহী পরিবহনের সংখ্যা ২৪ লাখ ২২ হাজার ১২৯টি। এর মধ্যে যান্ত্রিক যানবাহনের সংখ্যা ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৮৯৪টি।
মালবাহী পরিবহনের সংখ্যা দুই লাখ ৩৭ হাজার ১২৯টি। এর মধ্যে আবার যান্ত্রিক পরিবহনের সংখ্যা এক লাখ ৯৪ হাজার ৩১৮টি। অযান্ত্রিক পরিবহনের সংখ্যা ছয় লাখ ৪৩ হাজার ২৩৪টি। ওই সব যানবাহনে কর্মরত জনবলের সংখ্যা ৩১ লাখ ৭৮ হাজারটি। এর মধ্যে চালকের সংখ্যা ২৭ লাখ ছয় হাজার, হেলপার ক্লিনারের সংখ্যা দুই লাখ ৭০ হাজার, সুপারভাইজর-কন্ডাকটর ৫৭ হাজার এবং দৈনিক বেতন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মী ৩২ হাজার।
এ ছাড়া নৌপরিবহনের সংখ্যা দুই লাখ ৬২ হাজার ২০৪টি। এর মধ্যে যাত্রীবাহী পরিবহনের সংখ্যা এক লাখ ৭৪ হাজার ২৭৬টি, যান্ত্রিক পরিবহনের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৭৮৪টি, অযান্ত্রিক পরিবহনের সংখ্যা এক লাখ সাত হাজার ৪৯২টি, মালবাহী পরিবহনের সংখ্যা ৮৭ হাজার ৯২৮টি, যান্ত্রিক পরিবহনের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৫৬২টি এবং অযান্ত্রিক পরিবহনের সংখ্যা চার হাজার ৩৬৬টি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘এই জরিপের পরিধি ও বিশ্লেষণে যা দেখছি তা জিডিপিতে বিশেষ অবদান রাখবে। এ ছাড়া এসডিজির অর্জনেও এই জরিপটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমাদের সড়কের অনেক বিশৃঙ্খলা রয়েছে। বিআরটিএ হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর আমরা চার লাখ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছি। আমাদের জরিপের সঙ্গে বিবিএসের জরিপের কিছুটা ফারাক রয়েছে। তবুও আমরা আশা করি এই জরিপ থেকে প্রদত্ত ফলাফল পেয়ে আমরা সুফল পাব।’
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একটি জিডিপি বেজ লাইন তৈরি করছি। আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি। পরিবহন সেক্টরে বিশৃঙ্খলার পেছনের অন্যতম কারণ যত্রতত্র গাড়ি নামানো। আজকের এই পরিসংখ্যান আমাদের সঠিক হিসাব দিচ্ছে। এই পরিসংখ্যান আমাদের বলছে, এই খাতেও আমরা বেশ এগিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে নৌপরিবহন ও সড়ক খাতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে এই খাতে জিডিপির অবদান আসছে ৮ শতাংশ। আমাদের জিডিপির খাত ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে।’
বিবিএসের পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিবিএসের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত তথ্য ঘাটতি দূর করতে নানা জরিপ করে থাকি। ২০০৯ সালের পর ২০১৯ সালে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এই জরিপটি করি।’
নদী বন্দর / এমকে